ম্রো ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের অনাহারি পরিবারে প্রশাসনের জরুরী খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, থানচি,বান্দরবান :
বান্দরবানে থানচি উপজেলা খাদ্য সংকটে বাঁশ কোড়ুল খেয়ে বেচে থাকায় ম্রো ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১০০ পরিবারের জন্য জরুরী খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসক ও থানচি উপজেলা প্রশাসন।
দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তরে ব্যবস্থাপনায় প্রতি পরিবারের চাল ,ডাল, তৈল ,লবন থানচি বাজার নদীর ঘাট হতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্রো ছাত্র সংগঠন, লামা উপজেলা উগ্যথোয়াই স্বেচ্ছা সেবী সংগঠন প্রতি পরিবারের জন্য চাল, ডাল, ৫ লিটার তৈল, নাপ্যি, লবন সহ অসুস্থদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পানির বিশুদ্ধ করন ট্যাবলেট, সাধারণ জ্বস, স্যানেটারী প্যাড , পর্যাপ্ত পরিমানে ঔষধ তাদের হাতে তুলে দিয়েছে।
৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মামুন জানান, খাদ্য সংকটে বাঁশ কোড়ল খেয়ে বেঁচে থাকায় শতাধিক পরিবারের মাঝে এক সপ্তাহের খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সহ স্বেচ্ছা সেবী সংগঠন সমূহের খাদ্য সামগ্রী বিতরনে সময় সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বার, পাড়ার প্রধান কারবারী, বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। খাদ্য সামগ্রী বিতরন শেষে রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা রনি অভিজ্ঞতা কথা সাংবাদিকদের বলেন,আমাদের ইউনিয়নের মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা দুর্গম বুলু ম্রো পাড়া সহ কয়েকটি গ্রামে প্রায় শতাধিক পরিবার গত বছরে আবাহওয়া অনুকুলে থাকায় জুমের ধান ভালো ফলন হয় নি। সে সুবাদের চলতি বছরে বর্ষা শুরুতে জুমের ধান পরিপক্ক হওয়ার পর্যন্ত পরিচর্চা কাজে ব্যস্ত থাকার সময় ঐ সব পরিবারের মাঝে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়া এ অবস্থা সৃস্টি হয়েছে। দুর্গম ও মোবাইল নেট ওয়ার্ক না থাকায় আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের কর্তব্যরত জনপ্রতিনিধিরা সময় মতো জানতে পারিনি। আমরা হঠাৎ করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারি সুতারাং জানার পর আমরা প্রশাসনকে অবহিত করে এ ব্যবস্থা করে নিয়েছি।
যোগাযোগ করা হলে মেনহাত ম্রো কারবারী ও বুলু ম্রো কারবারী বলেন,আমরা জুমের অপরিপক্ক ধানকে পরিপক্ক করার জন্য পরিবারের সকলের নিয়ে জুমের পরিচর্চা কাজের ব্যস্ত ছিলাম হঠাৎ করে থানচি উপজেলার প্রেস ক্লাবের সভাপতি মংবোওয়াংচিং মারমা অনুপম আমাদের গ্রামে পৌছলে তাকে অবহিত করি। তিনি চলে যাওয়ার একদিন পর চেয়ারম্যান মেম্বার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছা সেবী সংগঠনের কর্মকর্তারা আমাদের সহায়তা দিতে আসে। এখন আমরা বাঁশ কোড়ল বদলে পরিশুদ্ধ ভাত খেতে পারছি। যে পরিমান পেয়েছে জুমের ধান পরিপক্কর হওয়ার পর্যন্ত টিকে থাকার সম্ভাবনা আছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মামুন বলেন, গত ২৬ তারিখে “খাদ্যাভাবে বাঁশ কোড়ল খেয়ে শতাধিক পরিবারে জীবনযাপন” “খাবারের অভাবে কাঁদছে বান্দরবানের দুর্গম কয়েকটি পাড়ার শিশুরা” শিরোনামে বিভিন্ন পত্রিকাগুলিতে সংবাদটি প্রকাশিত হলে সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব সাথে নজরে আনে।
থানচিতে দুর্গম এলাকাগুলো নেটওর্য়াক না থাকার আমরা সব খবর ও পায়নি। তারপর ও স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি এবং সঙ্গে সঙ্গে আমি জনপ্রতিনিধি সাথে যোগাযোগ করে খাদ্য সামগ্রী পাঠিয়ে দিয়েছি।
উপজেলা প্রশাসন ও বর্তমান সরকার আসন্ন জুমের ধান কাটার পর্যন্ত তাদের খাদ্য এবং শিশুদের চিকিৎসা ব্যবস্থা সহ তাদের নাগরিক সেবা দিতে সর্বদায় প্রস্তুত ।