পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারে দুই পক্ষের গোলাগুলি; গৃহবধূ নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ,খাগড়াছড়ি:
পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক দুই সশস্ত্র সংগঠনের গোলাগুলিতে রূপসী চাকমা নামে এক গৃহবধূ নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
৩ মার্চ ২০২৫, সোমবার উপজেলার দুর্গম মাচ্ছাছড়া এলাকায় আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ এবং জেএসএস (সন্তু)গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির সময় ওই গৃহবধূ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। নিহত গৃহবধূ দুর্গম সীমান্তের লোগাং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ধুধুকছড়া হাতিমারা এলাকার হেমন্ত চাকমার স্ত্রী রূপসী চাকমা (বন্দনা মা হিসেবে পরিচিতি)।
সুত্র জানায়, সকাল ৮ টার দুপুর পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তারে দু’সশস্ত্র দল দক্ষিণ ধুধুক ছড়া এলাকায় পরস্পরকে আক্রমণের উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ সময় একটি গুলি বাড়ির বেড়া ভেদ করে রূপসী চাকমার পিঠে বিদ্ধ হয়। এতে সঙ্গে সঙ্গে তার মৃত্যু হয়।
রুপসী চাকমার মেয়ে বন্ধনা চাকমা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক চিরকুটের ছবি ও স্ট্যাটাসের মাধ্যমে জানান,” ম’ মা’মারে হিত্তে মারেই ফেলেনা, ইক্কু মুই হারে মা ডাগিম” অর্থাৎ- আমার মাকে কেন তোমরা মেরে ফেললে। এখন আমি কাকে মা ডাকব।” সেখানে সে আরো বলেন, “তোমরা বরং এক কাজ করো, আমরা যারা সাধারণ জনগণ আছি সবাইকে আগে মেরে ফেলো, না হয় নিজেরা নিজেরা ডুয়েলিং আহবান করে সিদ্ধান্ত নাও। আর সহ্য হয় না।”
অপর দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় উভয় পক্ষের তিনজনের মৃত্যু ও ৪ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সত্যতা পাওয়া যায়নি।
পানছড়ির থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো জসীম উদ্দিন বলেন,‘সকাল-থেকে পাহাড়ের দুটি আঞ্চলিক সংগঠণের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলি ঘটনা চলছে শুনেছি। দুর্গম এলাকা ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নাই। সন্ধ্যায় লোকমুখে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। তবে এই নিয়ে নিহতের পরিবার-স্বজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কেউ অভিযোগ করেনি। নিহতের পরিবারের অভিযোগ পেলে আইনগত সহায়তা করা হবে।
উল্লেখ্য, আধিপত্য বিস্তারে দীর্ঘদিন ধরে পানছড়ির সীমান্তবর্তী এলাকায় খুন,অপহরণ সহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে অস্থিতিশীল চলছে। সেখান প্রায়ই আধিপত্য বিস্তারে দু’পক্ষের গোলাগুলি ও সশস্ত্র হামলা চলে।পাহাড়ী দুর্গম এলাকার সুবাদে সেখানে গুলিবিদ্ধ ও নিহত হলেও জন সম্মুখে খবর আসে না। গত ১০ নভেম্বর ২০২৪ সশস্ত্র হামলায় পিসিপির সাবেক ছাত্র নেতা ও ইউপিডিএফ সংগঠক মিটন চাকমা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়।