নোয়াখালীতে বিজয় মেলায় অশ্লীল নৃত্য, শিক্ষার্থীদের ভীড়
নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর কবিরহাটের জগদানন্দ গ্রামে বিজয় মেলার নামে মাদক ব্যবসা ও অশ্লীল নৃত্য আসর চালানোর অভিযোগ উঠেছে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মুনাফ এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক কামাল উদ্দিন বাবুলের বিরুদ্ধে। আর এসব প্রদর্শনীতে দর্শক সারিতে ভিড় বাড়ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশে মাদক ব্যবসা ও এ নগ্ননৃত্যের সুযোগ হয়েছে এবং চলছে। ধান সিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন কোম্পানি এ মেলার উদ্বোধন করেন।
২৬ ডিসেম্বর ২০২২ সোমবার রাতে মুকবুল চৌধুরী হাটের এই বিজয় মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, মেলায় রয়েছে নামসর্বস্ব ১৫-২০টি দোকান। মেলার মূল আকর্ষণ হলো নগ্ন নৃত্যের আসর। রাত ১১টা থেকে উঠতি বয়সী স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী আর গ্রাম্য যুবকদের উপচে পড়া ভিড়। নগ্ন নৃত্য চলাকালে মুঠোফোনে ভিডিও এবং ছবি ধারণ একেবারেই নিষিদ্ধ। মুঠোফোনে ভিডিও এবং ছবি ধারণ করলে মেলা কমিটির লোকজন ছিনিয়ে নেয় মুঠোফোন। এসব বিষয়ে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন কোম্পানীর কাছে স্থানীয় একালাবাসী একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ৫ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত মুকবুল চৌধুরী হাট বিজয় মেলার অনুমোদন নেয় মেলা আয়োজক কমিটি। মেলায় তারা যাত্রাপালার অনুমোদন নিলেও রাতের আঁধারে চলছে উলঙ্গনৃত্য আর ভ্রাম্যমাণ বেচা কেনা চলছে চোলাই মদ-ইয়াবা ও গাঁজা। মেলা আয়োজক কমিটির একাধিক সদস্য জানান, কবির হাট থানার পুলিশের সাথে চুক্তি হয়েছে মঙ্গলবার রাত থেকে মেলায় ১২টি জুয়ার আসর বসবে।
স্থানীয় বাসিন্দা শরিয়ত উল্যাহ সাইমুন জানান, মেলায় প্রথম দিন থেকেই চলছে অশ্লীল নাচ-গান। তাতে উঠতি বয়সের কিশোর ও যুবকেরা নষ্ট হতে বাধ্য। অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত যাত্রা দেখতে যায়। এতে রাতের আঁধারে চলছে উলঙ্গনৃত্য আর ভ্রাম্যমাণ বেচা কেনা চলছে চোলাই মদ-ইয়াবা ও গাঁজায় নষ্ট হবে যুব সমাজ ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মেলা আয়োজন কমিটির সহ-সভাপতি আবদুল মান্নান মুনাফ এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন বাবুল বলেন, গতকাল আমরা মেলায় ছিলাম না। যদি আপত্তিকর কিছু হয়ে থাকে তা বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন কোম্পানী বলেন, আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেবারে জানিনা বললে ভুল হবে। আমি মন থেকে মেলা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত নই। দায়িত্বে থাকার কারণে অনেক কিছুতে আমাকেও দোষারোপ করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত জুয়ার কোন আসর বসেনি। জুয়ার আসর বসলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে, এলাকাবাসী নগ্ননৃত্য চলার বিষয়ে তার কাছে অভিযোগ করার সত্যতাও নিশ্চিত করেন।
কবিরহাট থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, গত দুই দিন আগে আমি নতুন এসেছি এই থানায়। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতিমা সুলতানা বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।