সেনাবাহিনী ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ব্যতিক্রম উদ্যোগ
বন্যার্তদের জন্য -এক টাকায় বাজার
স্টাফ রিপোর্টার.খাগড়াছড়ি :
খাগড়াছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শুরু হয়েছে “এক টাকায় বাজার”।
বুধবার ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ মাঠে অভিনব এই বাজারের উদ্বোধন করেন, ২০৩ পদাতিক ব্রিগেড খাগড়াছড়ির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মোঃ আমান হাসান, এসপিপি, এনডিসি, পিএসসি।
এরকম একটি মহত ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও সদর জোনকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান অথিতির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার আমান হাসান বলেন, এ উদ্যোগের মুল লক্ষ হচ্ছে সমাজে যারা নিম্ন আয়ের মানুষ, যারা বাজার থেকে উচ্চমুল্যে জিনিষপত্র কিন্তে পারে না তাদেরকে সহযোগীতা করা। খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত এলাকায় এ উদ্যোগ (এক টাকায় সব বাজার) পরিচালনা করা হবে বলেও জানান তিনি।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড ডিরেক্টর মোঃ জামাল উদ্দিন জানান, “দেশের যেকোন দুর্যোগে প্রতিবেশির পরিচয়ে দুর্গত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। বর্তমানে বন্যা দুর্গত ৮ টি জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছে বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবকরা। খাগড়াছড়িতে ২১ আগস্ট থেকে অধ্যবধি স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করে যাচ্ছে। পাশপাশি অতি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে বিভিন্ন ভাবে পুনর্বাসন করছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
পানছড়ি থেকে আসা লাকি ত্রিপুরা বলেন” বন্যায় ঘরবাড়ি সব ডুবে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়ি। বাচ্চাকে পছন্দের মুরগীর মাংস দিয়ে ভাত খাওয়াতে পারিনি বহুত দিন হয়। আজ এ বাজার থেকে ১ টাকায় মুরগী কিনে বাচ্চাকে মাংস দিয়ে ভাত খাওয়াব খুব ভালো লাগছে আমার।
খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা, পানছড়ি ও মহালছড়ির বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় ঘরে ঘরে গিয়ে বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবকরা উপকারভোগিদের মাঝে টোকেন বিতরণ করে। বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নারী, দিনমজুর, কৃষক ও বিধবাদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল হাসনাত জুয়েল, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার মো. জামাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই বাজারে প্রতিটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১ টাকায়! চাল ডাল, আটা, তেল,ডিম,মাছ মুরগী, কাপড়, শিক্ষা উপকরণসহ ১৯ ধরনের পণ্যের মধ্যে থেকে বাছাই করে অনধিক ৭ টি পণ্য বাছাই করে নিতে পারছেন যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৮০০ টাকা। ২ ডজন ডিম যেমন ১ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ঠিক তেমনি ১ টি মুরগি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১ টাকায়!। খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা, পানছড়ি ও মহালছড়ির বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার মোট ৫০০ পরিবার এই সুবিধা পাচ্ছেন।
এছাড়া বাজারের পাশপাশি ১০ টি পরিবারে পুনর্বাসন সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। খাগড়াছড়ি সদর বাদে অন্যান্য এলাকা থেকে আসা যাওয়ার জন্য ‘ফ্রি গাড়ি সার্ভিসও দেয়া হয়।