Breakingপার্বত্য অঞ্চলবান্দরবানসারাদেশ

চৈক্ষ্যং খালের ভাঙ্গনে মংচিং হেডম্যান পাড়া গ্রাম

আলীকদম , বান্দরবান :
বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পার্বত্য বান্দরবানের আলী কদম উপজেলার ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের চৈক্ষ্যং খালের পানির স্রোত তীব্র আকার ধারণ করে। আর এ স্রোতের তীব্রতার কারণে খাল পাড়ে অবস্থিত শত বছরের পুরাতন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি মংচিং হেডম্যান মার্মা পাড়াটি প্রতি বছর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ইতিমধ্যে ১০/১২ টি বসত ভিটা ও আবাদী জমি বিলীন হয়ে গেছে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,ভাঙ্গনের কারনে বসত বাড়ি হারানোর ভয়ে অনেকে বাধ্য হয়ে চলে যান অন্যত্রে। বর্তমানে যারা আছেন তারাও বসত ভিটা হারানোর ভয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছেন। বছর বছর এ খালের ভাঙ্গনে ছোট হয়ে আসছে মংচিং হেডম্যান পাড়াটির পরিধি। তাই পাড়াটি রক্ষায় ব্লক বাঁধ নির্মাণে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন পাড়াবাসী।

 

সরেজমিনে দেখা যায়,আলী কদমের জন বসতি গড়ে ওঠার প্রথম দিকে চৈক্ষ্যং খালের তীরবর্তী এলাকায় শত বছর আগে বসবাস শুরু করেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি মার্মা সম্প্রদায়ের লোকজন। তখনকার সময়ে অন্য উপজেলার সাথে যোগাযোগের জন্য একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌ পথ। সে সুবাদে এ পাড়াটি চৈক্ষ্যং খালের তীরে গড়ে উঠে। পরে এ পাড়ার আশপাশ এলাকায়ও ধীরে ধীরে বাঙালি জনবসতি গড়ে উঠে। বর্তমানে মার্মা গ্রামটিতে মোট ৫৫-৬০ টি পরিবার বসববাস করছে। চৈক্ষ্যং খালের নাব্যতা হ্রাসের কারণে এখন সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি বৃদ্ধি পায়। একদিকে মাতামুহুরী নদীর স্রোত অন্যদিকে চৈক্ষ্যং খালের পানির তোড়ে তীব্র ভাঙ্গনে বছর বছর সংকুচিত হচ্ছে মার্মা পাড়ার পরিধি। অব্যাহত ভাঙণের মুখে প্রতি বছর ধ্বংস হচ্ছে নদী তীরবর্তী বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। এখন নদীর পাশে থাকা পরিবার গুলো চরম হুমকিতে রয়েছে।

 

এ বিষয়ে মংচিং হেডম্যান পাড়ার পাড়া প্রধান অংসুই প্রু কারবারী জানান, ইতিপূর্বে জেলা পরিষদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন দপ্তরে পাড়াবাসীর পক্ষে একাধিক আবেদন করা হয়েছে। যদি খাল ভাঙ্গণ রোধ করা সম্ভব না হয় তাহলে চলতি বর্ষার আরও কয়েকটি ঘরবাড়ি নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির নিকট আকুল আবেদন করছি পাড়াটি রক্ষার জন্য ব্লক বাঁধ নির্মাণের। তিনি আরও বলেন, শতবছরের মংচিং হেডম্যান পাড়া রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির সু-দৃষ্ট কামনা করছি।

 

চৈক্ষ্যং খালের ভাঙ্গনের সত্যতা নিশ্চিত করে চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, চৈক্ষ্যং খালের প্রবল স্রোতে প্রতি বছর ভাঙ্গনের শিকার হয় নদী তীরবর্তী মংচিং হেডম্যান মার্মা পাড়াটি। পাড়াকে রক্ষা করতে হলে বড় বাজেটের প্রয়োজন। ইউনিয়ন পরিষদের সামান্য বরাদ্দে সমস্যা সমাধান হবে না । শত বছরের গ্রামটি রক্ষায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

Related Articles

Back to top button