Breakingপার্বত্য অঞ্চলরাঙ্গামাটিশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপন

চেঙ্গী দর্পন, স্টাফ রিপোর্টার,রাঙ্গামাটি : পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধাধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় তীর্থস্থান রাঙ্গামাটি রাজবনবিহারে কঠিন চিবর দানোৎসব উদযাপিত হয়েছে।

শুক্রবার দুপুর দুইটায় রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারে দিনব্যাপী এই ৪৮তম কঠিন চিবর দানোৎসব শুরু হয়।

রাজবন বিহার প্রাঙ্গনে বৌদ্ধ ধর্মীয় সমাবেশে প্রয়াত পার্বত্য ধর্মীয় গুরু বনভন্তে স্মৃতির উদ্দেশ্যে পার্বত্য ধর্মীয় গুরু বনভন্তের শীর্ষ মন্ডলী ও রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরের হাতে চীবর উৎসর্গ করেন রাজবন বিহারের উপাসক উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান।

বিহার প্রাঙ্গনে আয়োজিত পূণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে পঞ্চশীল প্রদান ও ধর্মদেশনা দেন রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের ভিক্ষু সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরসহ তিন পার্বত্য জেলার বৌদ্ধ পন্ডিত ভিক্ষুগণ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, চাকমা রাজ পরিবারের সদস্য চাঁদ রায়, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, রাজবন বিহারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সহ সভাপতি নিরুপা দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক অমিয় খীসা, প্রমুখ।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে কঠিন চীবর দান ছাড়াও, বুদ্ধমূর্তিদান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, কল্পতরু দান, বিশ্বশান্তি প্যাগোডার অর্থ দান, হাজার প্রদীপ দান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গেরুয়া কাপড়কে বলা হয় চীবর। পুণ্যবতি সেবিকা বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত প্রাচীন নিয়ম মতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে চরকায় সূতা কেটে, সূতা রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় তাঁতে কাপড় বুনে চীবর তৈরী করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয় বলে এর নাম কঠিন চীবর দান।

তবে বেইন বুনে চীবর তৈরি করার নিয়ম থাকলেও করোন পরিস্থিতির কারণে গত বছর এবং এ বছর চরকায় সুতা কেটে বেইন বুননের মাধ্যমে কঠিন চীবর তৈরীর অনুষ্ঠান বন্ধ রেখেছে রাজবন বিহার কর্তৃপক্ষ।
তাই সংক্ষিপ্ত পরিসরে ১ দিন ব্যাপী এই চীবর দানানুষ্ঠান শেষ করে। এই পূর্ণানুষ্ঠানে তিন পার্বত্য জেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা এবং বিদেশ থেকেও প্রতিবছর লাখো পূর্ণার্থীরা অংশ গ্রহণ করেন।


১৯৭৪ সাল থেকে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে চীবর দান হয়ে আসছে। এ উৎসবে যোগ দিতে প্রতি বছর দেশ-বিদেশ থেকে লাখো মানুষ ভিড় জমায় রাজবন বিহারে। তবে এ বছর করোনার কারণে এবার সে রীতি অনুযায়ী এ উৎসব অনুষ্ঠিত না হলেও পুণ্যার্থীর ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

আজ রাতে রাজবন বিহারে ফানুষ উড়িয়ে শেষ হবে এই কঠিন চীবর দান উৎসব।

Related Articles

Back to top button