
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :
খাগড়াছড়ির পানছড়ি ও মাটিরাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে আবারও বাংলাদেশে পুশ ইন করলো ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুই উপজেলার পৃথক দুটি সীমান্ত দিয়ে মোট ১৫ জনকে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়। এর মধ্যে পানছড়ির কচুছড়ি সীমান্ত দিয়ে ৬ জন এবং মাটিরাঙ্গার শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ৯ জন বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।
পানছড়ি উপজেলার কচুছড়ি সীমান্তে টহলের সময় ৩ বিজিবির সুবেদার মো. দেলোয়ারের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা ছয়জনকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে একজন পুরুষ ও পাঁচজন নারী রয়েছেন। তারা বর্তমানে মোহাম্মদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুলিশ হেফাজতে আছেন। পরিবারের লোকজন ও আত্মীয় স্বজনদের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান পানছড়ি থানা পুলিশ ।
অন্যদিকে, মাটিরাঙ্গা উপজেলার শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন হওয়া নয়জনের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর আলম জানান, তারা গভীর রাতে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা ভারতে অবৈধ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন এবং সেখান থেকে ধরে পুশ ইন করা হয়েছে। তবে তারা কোন প্রক্রিয়ায় বা কাদের মাধ্যমে ভারতে গিয়েছিলেন, তা এখনও তদন্তাধীন।
আটককৃতদের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ভারতীয় সীমান্তের ওয়াইনথং এলাকা থেকে তাদের পাঠানো হয়। তিন ঘণ্টা পাহাড়ি এলাকা পায়ে হেঁটে তারা কচুছড়ি সীমান্তে পৌঁছায়। একই সময়ে বিএসএফ ১১৪ ব্যাটালিয়নের হরি ক্যাম্পের সদস্যরা শান্তিপুর এলাকা দিয়ে ৯ জনকে সীমান্তের এপারে পাঠায়। পরে ৪০ বিজিবির পলাশপুর শান্তিপুর বিওপি সদস্যরা তাদের আটক করে। বর্তমানে তারা শান্তিপুর বাজার যাত্রীছাউনিতে বিজিবির হেফাজতে রয়েছে।
এদিকে, এই নিয়ে চলতি বছর খাগড়াছড়ির সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন হওয়া লোকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৬০-এ। এর আগে ৭ মে পানছড়ি ও মাটিরাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে একযোগে ১০২ জন, ২৬ মে ঘিলাতলী সীমান্তে ১২ জন এবং ১৯ জুন মাটিরাঙ্গা সীমান্তে ১৩ জনকে পুশ ইন করেছিল বিএসএফ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পুশ ইন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পরিপন্থী। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত কূটনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।