খাগড়াছড়িতে “চারি মহাতীর্থ ভ্রমণ” বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি :
খাগড়াছড়িতে উৎসব মুখর পরিবেশে ভ্রমণ কাহিনী “চারি মহাতীর্থ ভ্রমণ” নামক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বইটি লিখেছেন গুণী লেখক ও খাগড়াছড়ি জেলা’র প্রাক্তন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাধন কুমার চাকমা ও দেবপ্রিয় চাকমা।
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ,শনিবার বিকালে জেলা সদরের পানখাইয়া পাড়ায় এ “চারি মহাতীর্থ ভ্রমণ” বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য নিটোল মনি চাকমা,প্রফেসর বৌধিসত্ব দেওয়ান,জেলা পরিষদের সদস্য জয়া ত্রিপুরা সহ অন্যান্য লেখক,গবেষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়,চারি মহাতীর্থ ভ্রমণ বইয়ের মূল লেখক সাধন কুমার চাকমা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলার কামাকু ছড়া গ্রামে ২০শে আগস্ট ১৯৬১ সালে কৃষক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। প্রথমে গ্রামের পাঠশালায় তাঁর হাতে খড়ি হয়। পরে দীঘিনালা প্রাইমারি স্কুলে পঞ্চম পর্যন্ত এবং দীঘিনালা হাই স্কুল থেকে ১৯৭৮ সালে এসএসসি পাস করেন। খাগড়াছড়ি কলেজ থেকে ১৯৮০ সালে এইচএসসি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নাজিরহাট কলেজ থেকে বিএসসি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএড এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএড পাস করেন। দীঘিনালার বড়াদম হাই স্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। ২০১৬ সালে সহকারি জেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে খাগড়াছড়ি জেলা শিক্ষা অফিসে যোগদান করেন এবং পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২০ সালের ১৯শে আগস্ট জেলা শিক্ষা অফিসার পদ থেকে অবসরে যান। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। কন্যা বর্তমানে এডিসি, জামাই এডিসন্যাল এসপি ও পুত্র বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত। তাঁর স্ত্রী প্রণতি খীসা একজন সুগৃহীনী। সাধন কুমার চাকমা বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক কল্যাণ মূলক কাজ, বিভিন্ন সাংস্কৃতি কর্মকান্ড, দেশ ভ্রমণ ও লেখালেখির কাজে যুক্ত রয়েছেন।
লেখক দেবপ্রিয় চাকমা :
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলায় (চেঙ্গী ভেলী)। তার পড়াশুনা শুরু হয় ‘শরণার্থী শিশু’ হিসেবে ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার করবুক শরণার্থী শিবিরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আর সমাপ্ত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি মাস্টার্স ইন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও মাস্টার্স ইন সোসিওলজি এন্ড অ্যানথ্রপলজি সম্পন্ন করেন। তিনি স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থায় কাজ করেছেন। বর্তমানেও একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করছেন।
বর্তমানে চাকরির পাশাপাশি লেখালেখি ও সাহিত্য-সংস্কৃতি সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহত্তম সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠন ‘চাঙমা সাহিত্য বাহ’-র প্রতিষ্ঠাতা। ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বন্ধুদের সাথে নিয়ে ‘চাঙমা সাহিত্য বাহ্’ প্রতিষ্ঠা করেন। এ সংগঠনটি অন্যান্য কাজের মধ্যে ১৪ হাজার জনকে চাঙমা বর্ণমালা প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে।এ সংগঠনের পক্ষে চাকমা ভাষার অনিয়মিত সাহিত্য পত্রিকা ‘চাঙমা সাহিত্য পত্রিকা’ বেশ কয়েক বছর সম্পাদনা করেছেন।
এ পর্যন্ত তিনি নয়টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। সর্বশেষ বৌদ্ধ তীর্থ ভ্রমণবিষয়ক ‘চারি মহাতীর্থ ভ্রমণ’ সহকারী লেখক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এছাড়াও তিনি জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ চাকমা ভাষায় অনুবাদ করেছেন।