কিশোরগঞ্জ পাগলা মসজিদের দান বক্সে ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা
কিশোরগঞ্জ ;
কথিত রয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগল মসজিদে খাস দিলে যে-কোন মানত করেলে তার মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আর এমন বিশ্বাস থেকে প্রতিদিন এ মসজিদে হাজার হাজার মানুষ নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী মানত ও টাকা দান করেন। কেউ রোগ মুক্তি জন্য, কেউ মনোবাসনা পূর্ণ হওয়ার জন্য দান করেন। শুধু মাত্র মুসলিম ধর্মাবলম্বী নয় এমন বিশ্বাস থেকে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও ছুটে আসেন পাগলা মসজিদে।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে আটটি লোহার দানবাক্স রয়েছে। আর এ-সব দান বক্স থেকে এবার রেকর্ড পরিমাণ পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা পাওয়া গেছে। প্রতি তিন মাস পর পর বাক্সগুলো খোলা হলেও এবার চার মাস পর খোলা হয়েছে এ দান বক্স।
শনিবার (৬ মে ২০২৩ ) সকাল আটটায় মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। এর পর এক এক করে ১৯টি বস্তায় ভরা হয় বক্সে টাকাগুলো এবং গণনার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় মসজিদে দুই তলায়। সেখানে মসজিদ কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন, সাংবাদিকদের উপস্থিততে একে একে বস্তাগুলো ঢেলে গননার কাজ শুরু করা হয়। ২০৪ জন শনিবার দিনভর এ টাকা গননার কাজ করেন। গণনা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা পাওয়া গেছে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, এবার টাকা গণনার কাজে মাদ্রাসার ১০০ খুদে ছাত্র, ব্যাংকের ৬০ স্টাফ , মসজিদ কমিটির ৩৪ জন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য কাজ করছেন।
পাগলা মসজিদের দান বক্স থেকে প্রাপ্ত এ টাকা কোথায় যায়, কীভাবে ব্যবহার হয় এ বিষয়ে জানতে চাইলে, মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, শুরুতে দান বক্সে এত টাকা মিলতো না। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কয়েক লাখ, লাখ থেকে কোটি ছাড়িয়ে যায় এবং দিন দিন টাকার অংক বৃদ্ধি পায়। সর্বশেষ গত জানুয়ারি মাসে পাগলা মসজিদের দান বক্স থেকে রেকর্ড চার কোটির বেশি টাকা পাওয়া যায়।
তিনি জানান, শুরুতে দান বক্সে পাওয়া টাকা থেকে আশপাশের মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজ সহ বিভিন্ন মানুষের অসহায়ত্বে দান করা হতো। বর্তামানে আড়াই থেকে তিন বছর ধরে দান বক্স থেকে প্রাপ্ত টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হচ্ছে। উদ্দেশ্য পাগলা মসজিদের এই স্থানে, এ অঞ্চলের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী একটি আধুনিক দৃষ্টি নিন্দিত মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করা।
শুক্রবার হলে দেশে দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এখনে আসেন নামাজ আদায় করেন, দান করেন। সারাদেশের মুসল্লিদেরও একটা আবেগ জড়িত এখানে। তাই আমরাও চাই এখানে দৃষ্টিনন্দিত একটি মসজিদ হোক।
আপনারা ইতোমধ্যে জেনে থাকবেন, প্রায় একশ দশ কোটিরও বেশি টাকা ব্যায়ে একটি ছয়তলা বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য পরামর্শ নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। পরামর্শক নিয়োগ শেষ হলে চূড়ান্ত ডিজাইন করা হবে ।