বান্দরবানে র্যাবের অভিযানে নব্য জঙ্গি সংগঠনের ৯ জঙ্গি গ্রেফতার
অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার
স্টাফ রিপোর্টার , বান্দরবান :
বিছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ এর ছত্রছায়ায় নতুন জঙ্গি সংঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার পার্বত্য অঞ্চলের প্রশিক্ষণ কমান্ডার দিদার হোসেন ওরফে চাম্পাই’সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সোমবার ভোরে বান্দরবান সদরের টংকাবতী এলাকা থেকে র্যাব ১,১১ও ১৫ এর যৌথ অভিযানে তাদের গ্রেফতার করতে র্যাব সক্ষম হয়। এ সময় অভিযানে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
১৩ মার্চ ২০২৩ সোমবার দুপুরে বান্দরবান জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে র্যাব এর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন মিডিয়া ব্রিফিংয়ে করে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
আটকৃতরা হলেন, কুমিল্লার আব্দুর রহিমের ছেলে মো. দিদরি হোসেন ওরফে মাসুম চাম্পা (২৫), নারায়ন গঞ্জ সদরের মো. ইউনুস সর্দারের ছেলে আল আমিন সর্দার ওরফে আব্দুল্লাহ আবাই (২৯), ঢাকা কামরাঙ্গীর চরের মো. আবুল কালামের ছেলে সাইনুন ওরফে রায়হান হুজাইফা(২১), সিলেট বিয়ানি বাজারের কামাল আহম্মদ চৌধুরীর ছেলেতাহিয়াত চৌধুরী ওরেফে পাভেল রিতেং (১৯), সিলেট শাহপরানের আব্দুল কাদিরের ছেলে মো. লোকমান মিয়া (২৪), কুমিল্লা লাকসামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে মো. ইমরান হোসেন ওরফে সাইতোয়াল শান্ত (৩৫), জিনাইদহ কোর্টচাদ পুরের আনোয়ার হোসেনের ছেলে আমির হোমেন (২১), বরিশাল সদরের ফারুক হাওলাদারের ছেলে মো. আরিফুর রহমান ওরফে লাইলেং(২৮), ময়মনসিংহ ফুল পুরের মো. গেয়াসউদ্দিন এর ছেলে শামিম মিয়া ওরফে রমজান বাকলা(২৪)কে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় প্রেসব্রিফিংয়ে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, তথা কথিত হিজরতের নামে উদ্ভুদ্ধ হয়ে ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর থেকে ৮ তরুন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ঘটনায় তরুণদের পরিবার কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজ তরুণদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা কতে গিয়ে র্যাব জামাতুল আসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামক নতুন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় থাকার তথ্য পায় ও র্যাব জানতে পারে এই সংগঠনের সদস্যরা পার্বত্য চট্রগ্রামের বিচ্ছিন্নতা বাদী সংগঠন কেএনএফ এর সহায়তায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে।
খন্দকার আল মঈন আরো বলেন, পার্বত্য এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাঙামাটির বিলাই ছড়ি ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি থেকে বিচ্ছিন্নতা বাদী ও জঙ্গি সহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তী ১১ জানুয়ারি বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়ি থেকে প্রশিক্ষণরত জঙ্গির ৫ সদস্য এবং ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সূরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান রণবীর ও বোমা বিশেষজ্ঞ বাশারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ৭ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের থানচি রেমাক্রি ব্রিজ এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশী অস্ত্র, বোমা তৈরীর সরঞ্জামাদি গোলাবারুদ ও নগদ সাত লক্ষাধিক টাকাসহ জঙ্গি সংগঠনের ১৭ জন এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ৩ জন বিভিন্ন সময়ে র্যাব পরিচালিত অভিযানে সর্বমোট ৫৯ জন এবং পাহাড়ে অবস্থানরত প্রশিক্ষণ ও কার্যক্রমে পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ এর ১৭ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসে বলে জানান র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন ।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সাল থেকে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্টি বম সম্প্রদায়ের কিছু বিপথগামী যুবক কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন গড়ে তুলেন। পরবর্তীতে তাদের আশ্রয়ে শসস্ত্র প্রশিক্ষণে যুক্ত হয় সমতল থেকে আসা নব্য জঙ্গী সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বেশ কিছু সদস্য। তাদের নিমূলে গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে যৌথবাহিনীর সদস্যরা। এ অভিযানে এপর্যন্ত সর্বমোট ৫৯ জন এবং পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ এর ১৭ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়।