Breakingজাতীয়দুর্ঘটনাসারাদেশ

সালথায় ঘূর্ণিঝড়ে বসতঘর লন্ডভন্ড, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক , সালথা ,ফরিদপুর  :
টানা তিন দিনের ভারি বর্ষণ ও আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে ফরিদপুরের সালথায় ২০টি পরিবারের অন্তত ৩০টি বসতঘর লন্ডভন্ড হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

 

বৃহস্পতিবার (০৫ অক্টোবর ২০২৩) সন্ধ্যার আগে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের সোনাতুন্দী গ্রামের নমো পাড়ায় ভয়াবহ ঝড় মত এই ঘটনা ঘটে। অসংখ্য গাছপালা ভেঙে গেছে। বিদ্যুতের তার ছিড়ে অন্ধকার হয়ে গেছে পুরো একটি গ্রাম। হটাৎ ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্ষতিগ্রস্থরা।

 

এদিকে টানা প্রবল বর্ষণে ও ঘূর্ণিঝড়ে রোপা আমন সহ মাঠে থাকা বিভিন্ন ফসলের মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। নিম্নাঞ্চলে বসত বাড়িতে ঢুকে গেছে পানি। এছাড়াও পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারন মানুষ। বৃষ্টি চলমান থাকলে এবং ফসলের মাঠে পানি না নামলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সকল শ্রেনীর মানুষ ।

 

সরজমিনে জানা যায়, টানা বৃষ্টির মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে সোনাতুন্দী গ্রামে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে আঘাত হানে। প্রচন্ড বেগে মাত্র তিন মিনিটের ঝড়ের আঘাতে গ্রামের লিটু মুন্সী, ফারুক মুন্সী, মুরাদ মুন্সী, দবির মুন্সী, কাইউম মুন্সী, কামাল ঠাকুর, জামাল ঠাকুর, জমিলা বেগম, নিরু বেগম, ছানো কাজী, আতি কাজী ও হাফেজ মো. সগির মুন্সির অন্তত ৩০টি বসতঘর বিধ্বস্ত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা প্রায় সবাই কৃষক। অন্যদিকে বিধবা লিপি বেগমের একমাত্র সম্বল আধা পাকা বসতঘরটির ওপর বিশাল একটি গাছ পড়ে তছনছ হয়ে যায়। এ সময় লিপি বেগম বাথরুমে আশ্রয় নিয়ে প্রাণে বেঁচে যান।

বল্লভদী ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ঝড়ে তছনছ হয়ে গেছে ২০টি পরিবারের বসতঘর। অসংখ্য গাছপালা ভেঙে সড়কের ওপর পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে পুরো গ্রাম বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে। এমন অবস্থায় মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় প্রাথমিকভাবে পরিষদের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার ও ত্রাণ দেয়া হয়েছে।

 

উপজলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুদর্শন সিকদার বলেন, চলতি রোপা মৌসুমে উপজেলায় ১২৯৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ হয়েছে। টানা বর্ষনে ফসলের মাঠে পানি জমে গেছে। প্রায় হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান বাড়তে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আগামী দুদিনের মধ্যে জমা পানি না কমলে ফসল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া যেকোন প্রয়োজনে উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

 

সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, আমি ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েছি। ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।অনেকগুলি বসতঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। তাছাড়া আরও অনেকগুলো ঘর ও গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ৩০ টি পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার জন্য তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

Related Articles

Back to top button