Breakingশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

শ্রীনগরে দুশ্চিন্তা নিয়ে আলু চাষ

চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) : শ্রীনগরে গেল বছরের লোকসানের দুশ্চিন্তা মাথায় রেখেই এ বছরও আলু চাষ শুরু করেছেন এখানকার কৃষক। লোকসানের হিসাব কিছুটা পুষিয়ে উঠতে আলু চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

এরই মধ্যে উপজেলার বীরতারা এলাকায় কিছু সংখ্যক উঁচু জমিতে আলুর বীজ বপনের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও আটপাড়া, তন্তর ও কুকুটিয়া এলাকায় বেশীর ভাগ আবাদি জমিতে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০ ভাগ নিচু জমিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এসব জমিতে আলু বপনের জন্য প্রায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ বিলম্বনায় পড়েছেন কৃষক। এমনটাই জানান এই অঞ্চলের আলু চাষীরা। শ্রীনগর উপজেলায় এ বছর প্রায় ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কৃষি কর্মযজ্ঞ নিয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কৃষক।


সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের কিছু কিছু জমিতে বীজ আলু বপন করা শুরু হয়েছে। অন্যন্য জমি গুলো বীজ বপনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এছাড়াও আটপাড়া, তন্তর ও কুকুটিয়া ইউনিয়নের কৃষকরা জমি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যস্ত আছেন। লক্ষ্য করা যায়, পানি নিস্কাশনের অভাবে প্রায় জমিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে আলু বপনের জন্য কৃষকরা কিছুটা বিলম্বনার শিকার হচ্ছেন। এ সময় স্থানীয় কৃষকরা জানান, গতবারে আলুতে তাদের লাভ হয়নি। তার পরেও লোকসান কাটিয়ে উঠতে দুশ্চিন্তার মধ্যেই আলু চাষাবাদের জন্য এবারও উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।


কুকুটিয়া এলাকার বিবন্দী গ্রামের কৃষক আলম মোল্লা বলেন, তার বেশীর ভাগ জমিতেই এখনও পানি জমে আছে। দিনমজুররা জমি পরিস্কার করছেন। এর মধ্যে আগামী সপ্তাহে কয়েকটি জমিতে চাষ দেওয়া হবে। গত বছর তিনি ১২ কানি (১৪০ শতাংশ) জমিতে আলু চাষ করেন। আলুর দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছে তার। লোকসান কিছুটা পুষিয়ে উঠার স্বপ্ন নিয়ে এ বছরও ৭ কানি জমিতে আলু চাষের প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। আটপাড়া এলাকার মনির হোসেন, বীরতারা এলাকার সেলিম শেখ, ইদ্রিস শেখ, নাজিমুদ্দিনসহ অনেকেই বলেন, হতাশার মধ্যেই তারা এবারও আলু চাষ করছে। বীজ, সার, চাষ, শ্রমিক, কীটনাশক স্প্রে, ও বগরা জমি মূল্য পরিশোধ করা ও অন্যান্য সব খরচসহ এচাষে জমিতেই প্রতি মণ আলুর দাম পড়বে প্রায় ৭০০ টাকা। যদি আলুর বাজার মন্দা থাকে তাহলে এবারও আলুতে লোকসান হবে। এমনটাই বলছেন এখানকার আলু চাষীরা।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি কানি জমিতে আলু চাষে ইউরিয়া, পটাশ ও জীপসার প্রায় ২৮ বস্তা সার ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতি কানি জমি হালচাষ খরচ ধরা হচ্ছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা, একজন কৃষি শ্রমিকের ৩ বেলা খাবারসহ দৈনিক মজুরি ৫০০-৫৫০ টাকা, আলু চাষাবাদের জন্য প্রতি কানি জমি (মান অনুযায়ী) বগরা মূল্য প্রায় ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। হিমাগারের ৫০ কেজির ওজনের বস্তা বীজ আলু বর্তমান বাজার মূল্য ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা। এছাড়াও প্রতি বাক্স বীজ আলুর বাজার মূল্য প্রায় ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা (আলুর জাত অনুসারে)।


শ্রীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী জানান, উপজেলায় ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কন্ডাল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৬টি প্রদর্শনী বাস্তবায়ন হবে। প্রতি বস্তা ইউরিয়া ও ডিএপি সার ৮০০ টাকা, টিএসপি ১১০০ টাকা ও এমওপি ৭৫০ টাকা করে সরকারের নির্ধারীত মূল্য ধরা হয়েছে। সার গুদাম ও বিক্রয় কেন্দ্রগুলো পরিদর্শনে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অফিস মাঠে কাজ করছেন। শ্রীনগরে সারের কোন সংকট নেই।

Related Articles

Back to top button