তুমব্রু সীমান্তের শূন্য রেখায় রোহিঙ্গা ঝুপড়িগুলো পুড়ে ছারখার
চেঙ্গী দর্পন ,স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান :
জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) থেকে টানা তিনদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলিতে সীমান্তে বসবাসরত লোকজনের মাঝে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
২১ জানুয়ারি ২০২৩ শনিবার ভোরে থেমে থেমে গোলাগুলি শব্দ শুনা গেছে বলে দাবী করছে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাবাসী। তবে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ বিষয়ে এড়িয়ে যাওয়াতে কোন বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, সীমান্তের গোলাগুলি গত বছর ২০২২সাল থেকে শুরু হয়েছে। তখন ঘটনা ঘটে ছিল মিয়ানমারের ভূখণ্ডে। এখন সীমান্তের গাঁ ঘেঁষে জিরো পয়েন্টে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। অবশ্য তা মিয়ান মারের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপের মধ্যে। তবে আঁচ আঁচ খবর পাওয়া যাচ্ছে মিয়ানমারের ইয়াবা আর গরুর চোরাচালান নিয়ে চাঁদা আদায়ের আধিপত্য বিস্তারের এসব গোলাগুলির ঘটনা ঘটিতেছে। আমি আমার জানা তথ্যগুলি আমার উর্ধতন কর্মকর্তাদের কে জানানোর চেষ্টা করি।
জানা যায়, গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি ২০২৩) থেকে মিয়ানমারের আরাকানের স্বাধীনতাকামী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন ও বিচ্ছিন্নবাদী আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি চলছিলো। এসব গোলাগুলিতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে বলে শোনা যায়।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে আরও জানা যায়, বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গোলাগুলি চলছিল। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে তিন জন নিহত আর দুইজন গুলিবিদ্ধের খবর পেলেও তবে দায়িত্বশীল উদ্বর্তন কর্মকর্তাদের কোন ধরনের বক্তব্য নেওয়া যায়নি । তবে আহতদের কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার দ্বিতীয় দিন ১৯ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার দিকে জিরো লাইনের রোহিঙ্গা শিবিরে মিয়ানমারের দুই রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের পর দুবৃত্তরা জিরো লাইনের বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ঝুপড়ি গুলো পুড়িয়ে দেওয়ার পর সেখানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ইতিমধ্যে নিরাপত্তায় সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কে বিজিবির ও র্যাব টহল দৃশ্যমান । অপরদিকে চলমান ঘটনায় গত শুক্রবার (২০ জানুয়ারি ২০২৩ ) রাত ৮টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ফের গোলাগুলির শুনতে পেয়ে সীমান্তের লোকজন র্নিঘুমে রাত পার করে বলে জানায় স্থানীয় চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ ।
স্থানীয়দের তথ্য মতে জ্বলিয়ে দেওয়া আগুনে জিরো লাইনের রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ৮৫শতাংশ ঝুপড়ি ঘরই পুড়ে গেছে। রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন আর দফায় দফায় গোলাগুলির ঘটনায় আতঙ্কে সাহস্রাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তুমব্রু স্কুল ও আশেপাশে আশ্রয় রয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মিয়ানমারের দুই বিচ্ছিন্নতাবাধী রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে সংঘর্ষে হামিদ উল্লাহ নামের এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত ও মোহিদ উল্লাহ এবং এক ১২ বছরের শিশু আহত হয়। এঘটনায় রোহিঙ্গা শিবিরে আগুনে প্রায় ৮৫%শতাংশ ঝুপড়ি ঘর পুড়ে যায়।