চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক ,কোম্পানীগঞ্জ,( নোয়াখালী) : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীদের সাথে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের কর্মীসমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কোম্পানীগঞ্জ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ৪জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত দুই পক্ষের ৪০জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৭জনের অবস্থা আশংকাজনক।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের চাপরাশীরহাট বাজারের তরকারি বাজারের সামনে এই ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গুলিবিদ্ধরা হচ্ছেন, উপজেলার চরফকিরা গ্রামের নয়াব আলীর ছেলে ও বার্তা বাজার ২৪ এর সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজ্জাকির (২৮), বড়রাজাপুর গ্রামের আবদুল ওয়াহিদের ছেলে সাইদুর রহমান (২৬), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলামের ছেলে নুরুল অমিত (২০), বসুরহাট পৌরসভার আবুল কালামের ছেলে রায়হান (২০)। অপরদিকে গুরুত্বর আহরা হচ্ছে, চরফকিরা ইউনিয়নের মো.কাঞ্চন (৬০), মুছাপুর ইউনিয়নের আবুল খায়েরের ছেলে মাসুদ (২৫), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের আবদুস সাত্তারের ছেলে কামরুল হাসান (৩০), চরফকিরা ইউনিযনের আবদুল মান্নানের ছেলে ফরহাদ (৪০), চরফকিরা ইউনিয়নের বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির (২৮) বসুরহাট পৌরসভা এলাকার আদনান (২৪), মারুফ (২৫)। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো.সেলিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি আরো জানান, গুলিবিদ্ধ ৪জনসহ গুরুত্বর আহত ৭জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের কমিটি ভেঙ্গে দিলে আ’লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে বিরোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মির্জানুর রহমান বাদল সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে চরফকিরা ইউনিয়নের চাপরাশীরহাট বাজারে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার বিকেলে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়। পরে বাদলের অনুসারীরা চাপরাশীরহাট বাজারে মিছিল করতে গেলে কাদের মির্জার সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে কাদের মির্জা উপস্থিত হলে দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয় এবং তারা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ৪ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৪০জন আহত হয়েছে।
চরফকিরা গ্রামের বাহাদুর জানান, কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে ভিডিও ধারন করছিলো সাংবাদিক মুজ্জাকির। এসময় সংঘর্ষকারীদের গুলিতে সে আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি জানান এখনো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৪ জনসহ আহত ৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।