রামগড়ে ট্রাকের চাপায় মৃত মা-মেয়ের জীবনের মূল্য নির্ধারণ ১ লাখ ২০ হাজার
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক,রামগড় ,খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ির রামগড়ে গতকাল রবিবার (২৭ মার্চ) যাত্রীবাহী সিএনজি ও বালুভর্তি ড্রাম ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ও আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের নামে টাকা দিয়ে সমোঝোতার অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষে থেকে ঘাতক ট্রাক ও চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকায় হয়নি মামলা ও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকছেন চালক।
জানা গেছে, দুর্ঘটনার দিন গতকাল রাতেই ঘাতক ড্রাম ট্রাকের মালিক হেদায়েত উল্লাহ সহ কতিপয় ব্যক্তির বৈঠকে মামলা না করার শর্তে নিহত তাসলিমা বেগম ও তার শিশু কণ্যার জীবনের মূল্যে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা । নিহতের পরিবারের পক্ষে ভাসুর আলমগীর সমোঝোতা করেন এবং আহত আজিজ উল্যাহ, মমতাজ বেগম ও রওনারা বেগম কে চিকিৎসার জন্য মোট ৭৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেন ট্রাক মালিক।
গতকাল দুর্ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব বেপরোয়া গতির ড্রাম ট্রাক ও অদক্ষ্য চালকদের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড়উঠে। এমন দুর্ঘটনা পুনরাবৃত্তি হলেও প্রশাসনের পক্ষে কার্যত কোন আইনি প্রদক্ষেপ না নেয়ায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি মনে করে হাবিব আহমেদ নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেন, এসব দূর্ঘটনা এক প্রকার হত্যাকান্ড। জরিমানা দিয়ে আপোষ এক প্রকার একটি আইনে পরিনত হয়েছে। দুর্ঘটনা যেনো না ঘটে সে বিষয়ে পদক্ষেপ না নিয়ে টাকা দিয়ে সমোঝতা করা মানবতার চরম অবক্ষয়।
রামগড়ের পাতা ছড়ার ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নুরুল আলম সমঝোতার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত ও আহতদের পরিবারের সন্মতিতে রবিবার রাতেই এ সমঝোতা হয়।
নিহতের স্বামী সালে আহাম্মদ বলেন, মামলা করে কি আর তাদের ফিরে পাবো ? তবে তার বড়ভাই আলমগীর ট্রাক মালিকের সাথে কথা বলে দুর্ঘটনার বিষয়ে সমাধান করেছেন বলে জানান।
রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, দু’পক্ষের আপোষের কারণে নিহত বা আহতদের কারো অভিযোগ না থাকায় থানায় কোন মমলা হয়নি।
এদিকে, দুর্ঘটনায় শিশু কন্যাসহ নিহত তাসলিমা বেগমের পরিবারকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ রবিবার রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোন্দকার মো. ইখতিকার উদ্দীন আরাফাত তার অফিসে নিহতের স্বামী সালে আহম্মদকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, গতকাল বিকেল সাড়ে ৫ টায় রামগড় পৌরভার তৈচালা পাড়া স্কুলের সামনে যাত্রীবাহী অটো রিকশার সাথে বালু ভর্তি দ্রুতগামী একটি ড্রাম ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটো রিকশাটি দুমড়ে মুচড়ে ঘটনা স্থলে অটো রিক্সার যাত্রী তাসলিমা বেগম ও তার শিশু কন্যা তানহা ঘটনা স্থলেই মারা যায় এবং অটো রিকশায় থাকা অপর ৪ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন।