খাগড়াছড়িতে কৃষি যন্ত্রপাতি পেল ৭টি গ্রামের কৃষক

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।।
খাগড়াছড়ির যাদুরাম পাড়ায় অনুষ্ঠিত হলো এক গুরুত্বপূর্ণ কৃষি যন্ত্রপাতি হস্তান্তর অনুষ্ঠান। যা যেন পাহাড়ি কৃষকদের জীবনে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করল।
রবিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে যাদুরাম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এ অনুষ্ঠান, যা আয়োজিত হয় ‘জলবায়ু সহনশীল জীবিকা উন্নয়ন ও জলধারা ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (CRLIWM)’ এর আওতায়। প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB)-এর যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এদিন কমলছড়ি ইউনিয়নের কমলছড়ি মুখ, পাইলট পাড়া,কমলছড়ি হেডম্যান পাড়া,আমতলি খ্যাং দং পাড়া,যাদুরাম পাড়া,মধু পাড়া,থানা চন্দ্র পাড়াসহ মোট ৭টি পাড়ার কৃষকের মাঝে ১৬টি পাওয়ার টিলার,১২এইচপি পাওয়ার পাম্প ৭টি ও ৪এইচপি পাওয়ার পাম্প বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট কূটনীতিক সুপ্রদীপ চাকমা বলেন— “আজকের এই কৃষি যন্ত্রপাতি হস্তান্তর কোনো কেবল যন্ত্র সরবরাহ নয়, এটি একটি প্রতিশ্রুতি—পার্বত্য অঞ্চলে কৃষকের প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ। আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে খাদ্য ঘাটতির জায়গা থাকবে না—সমতল হোক কিংবা পাহাড়, উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছাবে সর্বত্র।সেই সাথে পার্বত্য অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে।”
তিনি আরও বলেন—“পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। সম্প্রীতি ও শান্তির বন্ধন নষ্ট করার সুযোগ নেই। এই পার্বত্য অঞ্চল আমাদের সবার, এখানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কামালছড়ি ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান পাক্রই মারমা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা,প্রকল্প পরিচালক পবন কুমার চাকমা,জেলা পরিষদের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ সহ জেলা পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধান দায়িত্বে রয়েছে চট্টগ্রাম হিল ট্র্যাক্টস আঞ্চলিক পরিষদ এবং সহ-বাস্তবায়নকারী হিসেবে কাজ করছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ।
এই যন্ত্রপাতি হস্তান্তরের মাধ্যমে যাদুরাম পাড়ার কৃষকদের মাঝে যেন ফিরে এসেছে নতুন আশার আলো। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, এটি শুধুই প্রযুক্তির সহায়তা নয়—বরং এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা কৃষিকে আধুনিকায়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং দীর্ঘমেয়াদে কৃষকদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলবে। এ যেন অনাহারহীন আগামীর স্বপ্ন দেখা এক বাস্তব পদক্ষেপ।