চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রামের বাঁশখালী পৌরসভায় সরকারি খাস জায়গায় অবৈধ ভাবে জোর পূর্বক দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার জলদী মিয়ার বাজার আনোয়ারা -বাঁশখালী পিএবি প্রধান সড়কে পাশে চৌধুরী মার্কেটের সামনেই অবৈধ ভাবে পৌর অনুমতি বিহীন এসব দোকান নির্মাণ করেছেন হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেট এর যুগ্ম মোতাওয়াল্লী দাবী কারী শেখ মুঈনদ্দিন চৌধুরী।
এলাকাবাসী ও মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জলদী মিয়ার বাজার চৌধুরী নিউ মার্কেটের সামনে খাস খতিয়ানের ভূমি জোরপূর্বক দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করেন। এতে করে মার্কেটের এবং বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা বলেন মিয়ার বাজারের ঐতিহ্যবাহী হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেট জামে মসজিদের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করে লুটপাট করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ওনি। তার একক গায়ের জোরে যা মন চায় তা করে বর্তমানে মসজিদ টার কোন সংস্থার না করে মসজিদ জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করে লুটেপুটে করে খাচ্ছে। এই মার্কেটের সামনে থাকা খাস জায়গা দখল করে সে প্রতিবারই দোকান নির্মাণ করে চলছে। মার্কেটের সামনে খাস খতিয়ান ভুক্ত গাড়ির পার্কিং এর জায়গায় রাতের আঁধারে ক্ষমতার প্রভাব কাটিয়ে জোর পূর্বক বেশ কয়েকটি দোকান নির্মাণ করে যাচ্ছে মুঈনুদ্দিন চৌধুরী।
রবিবার (২ জুলাই) সকালে জলদী মিয়ার বাজার এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সরকারি ওই খাস জায়গায় বেশ কয়েকটি পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
মিয়ার বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আতিকুল আলম বলেন , এই খাস জায়গাটিতে গত বছর ও এখানে বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছিলো। আমরা বাঁধা দিয়েছিলাম, কিন্তু সে গায়ের জোরে এসব দোকান গুলো নির্মাণ করে চলছে। কারো কোন বাঁধা মানছে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাঁশখালী পৌরসভার প্যানেল মেয়র -১ রোজিয়া সোলতানা রোজি ও একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ ইসহাক বলেন, জায়গাটি সরকারি খাস জায়গা। খাস খতিয়ান ভুক্ত জায়গায় কোন ধরনের পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমতি বিহীন মার্কেট নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমরা এই এলাকার কাউন্সিলর। আমাদের জানা মতে মার্কেটের সামনে এসব জায়গা সরকারী খাস খতিয়ান ভুক্ত। তবু পৌর এলাকায় কোন স্থাপনা করতে গেলে পৌর কতৃপক্ষের অনুমতি লাগে। উক্ত জায়গার উপর আমাদের জানা মতে হাইকোর্টে মামলা চলমান আছে। মামলা চলাকালীন সময়ে সে আদালতে কে বৃদ্ধা আঙুল দেখিয়ে রাতের অন্ধকারে মার্কেট নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা বিষয়ে পৌর মেয়র এবং স্থানীয় প্রশাসন কে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেট এর যুগ্ম মোতাওয়াল্লী দাবী কারী অভিযুক্ত শেখ মুঈনুদ্দিন চৌধুরীর সাথে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায় না গেলে ও তার অপর ছোট ভাই হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেটের ১নং যুগ্ম মোতাওয়াল্লী বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ্ব শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেট এর আমি ১ নং মোতাওয়াল্লী অথচ সে উক্ত ওয়াকফ এস্টেটের অনুমতি না নিয়ে গায়ের জোরে কিছু সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে মার্কেটের সামনে থাকা পার্কিং এর জায়গায় বেশ কয়েকটি দোকান নির্মাণ কাজ করতেছে। সে শুধু এটা নয়, হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেট এর পরিচালনাধীন প্রায় ৩-৪ শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মিয়ার বাজার জামে মসজিদ ও চৌধুরী মার্কেটের প্রায় দশশত কোটি টাকা লুটপাট করে খেয়েছে। যার কোন ওয়াকফ এস্টেটের লিখিত কোন অনুমতি নাই। কোন আয়-ব্যয় এর হিসাব নাই। নিজের একক নিজের একক স্বেচ্ছাসারীতায় যা মন চায় তা করে যাচ্ছে। অন্য দিকে ওয়াকফ এস্টেটের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের মামলা চলমান রয়েছে। অথচ সে আদালত কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একের পর এক হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেটের সমস্ত জায়গা এবং মার্কেটের সবকিছু লুটপাট করে খাচ্ছে। আদালতে মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও সে অবৈধ পন্থায় অনুমোদন বিহীন এসব দোকান নির্মাণ করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খন্দকার মাহমুদুল হাসান জানান, খাস খতিয়ান ভুক্ত জায়গায় দোকান নির্মাণের বিষয়ে আমাকে কেউ অবিহিত করেনি। খোঁজ নিয়ে দেখতেছি। তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ সাইদুজ্জামান চৌধুরী জানান, সরকারি কোনো নিয়মনীতির বাইরে কোনো কাজ আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ যদি জোরপূর্বক সরকারি জায়গায় দোকান নির্মান করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।