সাংবাদিক পলাশের দাহক্রিয়া সম্পন্ন; এলাকায় শোকের ছায়া
দিঘীনালা, খাগড়াছড়ি:
প্রথম আলোর খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা প্রতিনিধি পলাশ বড়ুয়ার দাহক্রিয়া বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে দীঘিনালাস্থ মহাশ্মশানে সম্পন্ন হয়েছে ।
গত বুধবার রাতে তিনি ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দুই ছেলে, স্ত্রী, আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য শুভাকাঙ্খী রেখে গেছেন তিনি। তার অকাল মৃত্যতে খাগড়াছড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তাঁর দাহক্রিয়ার আগে দীঘিনালার বোয়ালখালী এলাকার একটি বৌদ্ধ বিহারে আয়োজিত স্মরণ সভায় দীঘিনালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী মো. কাশেম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাতুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, দৈনিক প্রথম আলো’র যুগ্ম-বার্তা সম্পাদক কবি ওমর কায়সার, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি জীতেন বড়ুয়া, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী, দীঘিনালা প্রেসক্লাব সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম রাজু এবং রাঙমাটির দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম এর সম্পাদক ফজলে এলাহী সহ শুভাণুধ্যায়ীরা বক্তব্য রাখেন।
এদিকে সাংবাদিক পলাশ বড়ুয়ার অকাল মৃত্যুতে খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সংরক্ষিত নারী এমপি বাসন্তী চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী পৃথক পৃথক বিবৃতিতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
উল্লেখ, সাংবাদিক পলাশ বড়ুয়া খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বোয়ালখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কাঁঠালতলী এলাকার মৃত স্বদেশ বড়ুয়া ও মৃত মুক্তিযোদ্ধা সুজাতা বড়ুয়ার বড় ছেলে। তিনি পাহাড়ি জনপদে সাংবাদিকতার পাশাপাশি মানবিক সমাজ কর্মী এবং লেখক হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর।
জানা গেছে, গত রোববার (৩০ জুলাই) রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় বেড়াতে গিয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য তাঁকে প্রথমে লংগদুর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থা অবনতি হলে তাকে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল ও চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে তাঁকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
অন্য এক বিবৃতিতে খাগড়াছড়ির সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা জানান, পলাশ বড়ুয়া ছিলেন সবুজ পাহাড়ের চারণ সাংবাদিক। দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় ধরে পাহাড়ের মানুষের আনন্দ বেদনা পাওয়া না পাওয়ার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। দীঘিনালাতে তাঁর কাজের ক্ষেত্র হলেও তার লেখা প্রতিবেদন-ছবি পাহাড়-সমতল ছাপিয়ে বিদেশেও সুনাম কুড়িয়েছে। দরিদ্র মানুষের মন জয় করে নেয়ার মতো হৃদয়স্পশী পলাশ বড়ুয়ার সাংবাদিক উত্তর প্রজন্মের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবে। পাহাড়ের মানুষের উন্নয়নে তিনি তাঁর সাংবাদিকতা জীবনকে উৎসর্গ করেছেন।