চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক , শিবালয় ,মানিকগঞ্জ :
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নের নয়াবাড়ি এলাকার কোলা গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গা ভরাটের অজুহাতে রমরমা ড্রেজার বাণিজ্য চলছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জাফরগঞ্জ এলাকার জাহাঙ্গীর মেম্বার, হাফিজুল, জাকির ও মাহমুদ নামে কতিপয় ড্রেজার ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবত ওই এলাকায় দাপটের সাথে ড্রেজার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও পাশ্ববর্তী ফসলী জমির ক্ষতি করে তাঁরা জাফরগঞ্জ এলাকার যমুনা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাঁদের এ অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য সাময়িক বন্ধ হলেও রহস্যজনকভাবে এর মূল উৎপাটন যেন কোনক্রমেই সম্ভব হচ্ছেনা।
উথলী ও তেওতা ইউনিয়নের কতিপয় স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মাটি ব্যবসায়ী হাফিজুল, জাহাঙ্গীর মেম্বার, জাকির ও মাহমুদের দাপটে সাধারণ মানুষ অসহায়। কোন ব্যক্তি ড্রেজার বন্ধের বিষয়ে তাঁদের অনুরোধ করলে তাঁরা উল্টো নানারকম ভয়ভীতি ও মামলার ভয় দেখান। সম্প্রতি তাঁরা কোলা গ্রামে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে মাটি ভরাটের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় অকুতোভয় দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নির্বিঘ্নে ড্রেজার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের নির্ভিক কাজকর্ম এবং কথাবার্তায় মনে হয়, তাঁরা যেন ড্রেজার বানিজ্যের বৈধ লাইসেন্স পেয়েছেন!
৭ এপ্রিল ২০২৩ শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায় , ওই মাটি ব্যবসায়ীরা তেওতা ইউনিয়নের জাফরগঞ্জ এলাকার যমুনা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে উথলী ইউনিয়নের কোলা গ্রামে নির্মাণাধীন আশ্রয়ণ প্রকল্পে মাটি ভরাটের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানা জমি ভরাট করছেন। এর মধ্যে কোলা গ্রামের মৃত, হোসেন শেখের ছেলে জয়নাল উদ্দিন ও মৃত, আফাজ উদ্দিনের ছেলে মো. শফি উদ্দিনের জমি উল্লেখ যোগ্য।
উথলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গিয়াসউদ্দিন জানান, মাটি ব্যবসায়ীরা আশ্রয়ণ প্রকল্পে মাটি ভরাটের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় মাটি ভরাট করছেন। এ প্রকল্পে আর বেশি মাটি লাগবেনা। এরপর তাঁরা এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানা জায়গা ভরাট করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। আগে উপজেলা প্রশাসনকে ড্রেজারের বিষয়ে অবহিত করা মাত্র পদক্ষেপ নিতেন। কিন্তু বর্তমানে উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কোন ফল পাওয়া যায়না। উনারা নিরব ভুমিকা পালন করছেন। এ জন্য এখন আর প্রশাসনকে কিছু বলিনা।
জাফরগঞ্জ এলাকার জাহাঙ্গীর মেম্বার জানান, ইউএনও স্যার মাটি ব্যবসায়ীদের নামমাত্র টাকা দেন,এতে তাঁদের পোষায়না। তাই মাটি ব্যবসায়ীরা এদিক ওদিকের দু’একটা জায়গা ভরাট করে কিছু বাড়তি টাকা রোজগার করে থাকেন।
মাটি ব্যবসায়ী হাফিজুল প্রতিবেদককে জানান, আমি, জাহাঙ্গীর মেম্বার, জাকির ও মাহমুদ মিলে মাটি ব্যবসা করি। আমাদের এটি নিয়ে নিউজ করার প্রয়োজন নেই। আপনি জাফরগঞ্জ আসেন কথা বলি।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদু রহমান আমাদের প্রতিনিধিকে জানান,মাটির নির্ধারিত যে রেট আছে আমি তাঁদেরকে সেটিই দিচ্ছি। আমি মাটি ব্যবসায়ীদের কম টাকা দিচ্ছিনা। আশ্রয়ণ প্রকল্পে মাটি ভরাটের জন্য আমি ডিসি স্যারের কাছ থেকে অনুমতি এনেছি। আশ্রয়ণের জায়গা ভরাট করতে এসে যদি তাঁরা অন্য কোথাও ভরাট করেন আমি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।