বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায় ,তাই সব কিছুতেই না : তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
চট্টগ্রাম :
“ বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পেয়েছে, নির্বাচনী ভীতিতে পেয়ে বসেছে তাদের। এজন্য তারা ইভিএমেও ‘না’ বলছেন আবার ছাপানো ব্যালটেও ‘না’ বলছেন। আসলে বিএনপি ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের নিজেদের ওপরই কোন আস্থা নাই। ক্রমাগত ভাবে নির্বাচন থেকে পালিয়ে গেলে এক সময় পুরো বিএনপি দলটাই জনগণের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে।”
৫ এপ্রিল ২০২৩ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন-এর নগরীর এম এম আলী রোডের ক্যাম্পাসে বিশেষ সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাঝান মাহমুদ।
তিনি বলেন, বিএনপি এতদিন ইভিএমে ভোটে যাবে না বলার পর নির্বাচন কমিশন এখন প্রিন্ট ব্যালটে ভোট গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন, সেটাতেও তাদের আগ্রহ নেই বলেছেন মির্জা ফখরুল। তার মানে বিএনপি নির্ব্চান থেকে, জনগন থেকে পালিয়ে থাকতে চায়। তারা শুধুমাত্র ষড়যন্ত্রের পথেই হাঁটছে, আর পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। দেশ-বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আর বিদেশিদের হাতে পায়ে ধরে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা যায় কিনা সেই চেষ্টায় তারা সর্বদা লিপ্ত আছে। তবে এগুলো করে কোন লাভ হবে না।
তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা যদি একটু খতিয়ে দেখেন তাহলে দেখতে পাবেন, বিএনপি ২০০৮ সালের নির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে অংশগ্রহণ করে মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালে নির্বাচন থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম এবং তালেবান সহ সবাইকে নিয়ে ঐক্য করেছিল। ঐক্য করে তারা আসন পেয়েছিল মাত্র ছয়টি। পরে মহিলা আসন সহ হলো মোট সাতটি। সেজন্য তারা জানে এই নির্বাচনেও তাদের কোন সম্ভাবনা নাই। সে জন্যই নির্বাচন বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ওপর বিএনপি ও তাদের মিত্রদের কোন আস্থা নাই।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন অনেকটা তাদের দাবি মেনে নিয়েই ইভিএম থেকে সরে প্রিন্ট ব্যালটে ভোট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এখানে তো বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর দাবিটাই মেনে নেয়া হয়েছে বলে বলা যায়। সুতরাং এখন নির্বাচনের জন্য যদি তাদের দল গোছায় এবং নির্বাচনে আসে সেটি তাদের জন্যই মঙ্গল হবে।
অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি অব ব্রাসেলস এর চেয়ারম্যান প্রফেসর এন্ড্রে সেনকেন কে সম্মান সুচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করা হয়। এর আগে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন-এর বিশেষ সমাবর্তনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ তার নিজ শহরে এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর বহু গ্র্যাজুয়েট এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এবং তারা সমাজের অগ্রগতিতে এবং সমগ্র সমাজে নারীদের অগ্রগতিতে ভুমিকা রেখে চলছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে নারীদের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এখন দেশের প্রতিটি সেক্টরে নারীরা কাজ করছেন। এখন আমাদের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, পুলিশের এসপি, ডিসি আছেন নারী। মাত্র ১২ বছর আগেও একজন নারী ডিসি বা এসপি অথবা ইউএনও হবেন তা কল্পনাও করা যায়নি। এখন দেশে অনেক নারী ইউএনও মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। একজন রুবানা হককে দেখলে আপনি অনুমান করতে পারবেন কিভাবে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে। তিনি ৮০ শতাংশ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প মালিক সমিতি বিজিএমইএ’র নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নয়, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নও হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা শুধু শিক্ষিতই নয়, স্বনির্ভরও হয়ে ওঠে, সমাজে অবদান রাখার যোগ্যতা অর্জন করে। এশিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা অনেক দিক দিয়েই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক বেশি যোগ্য। আপনারা এখানকার শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা দিচ্ছেন।
বিশেষ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন ইশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর ডিন ডেভিট টেইলর বীনাকোনা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্টাতা ভাইস চ্যান্সেলর কামাল আহমেদ, বর্তমান ভিসি রুবানা হক, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাসেলস এর চেয়ারম্যান প্রফেসর এন্ড্রে সেনকেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. নেহাল আহমেদ প্রমুখ।