প্রশাসন যখন নীরব, স্বেচ্ছাসেবী তখন জনগণ
স্বেচ্ছাসেবীদের সেবায় সৌন্দর্য ফিরে পেলো পানছড়ির র্যাবার ড্যাম
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, পানছড়ি,খাগড়াছড়ি:
শহর সাজাতে দৃষ্টিনন্দন জায়গার তুলনাই নেই। তবে লক্ষ্য করলে দেখা মিলে এমন দৃষ্টি নন্দন জায়গা গুলিই ধারন করে আছে অশোভনীয় আকারে। তেমনি ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে সৌন্দর্য হারাতে বসেছে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার রাবার ড্যামের ।
শত শত কৃষকের মুখে হাসি ফোটানোকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালে পানছড়ি সদর থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে শান্তিপুর এলাকায় চেঙ্গী নদীর বুকে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিলো রাবার ড্যাম। ফলে একদিকে যেমন কৃষকের মুখে স্বস্থির হাসি ফুটেছিলো অন্যদিকে দর্শনার্থীদের চেহারায় দেখা মিলেছে প্রকৃতির সৌন্দর্যের ছাপ।
অথচ বর্তমানে সৌন্দর্য বর্ধনের স্থানে এসে দেখা মিলছে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। রাবার ড্যাম এলাকার পুরো নদী জুড়ে জমে আছে ময়লার ভাগাড়। প্রতিনিয়তই চেঙ্গী নদীতে ফেলা হচ্ছে পানছড়ি বাজারের সকল আবর্জনা। আর সেটি উজানে রূপ নিয়ে রাবার ড্যামকেই ভাটা হিসেবে বেছে নিয়েছে। ফলে দূষিত হচ্ছে নদী, সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে এই জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটি।
এ বিষয়ে কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকা য় সংবাদ প্রকাশিত হয়। স্থানীয় প্রশাসনের নিকট বারবার তাগাদা দেয়া হলে ও ফল মেলেনি গত ৬ মাসে। এদিকে প্রকৃতির এমন বিকৃত রূপে আর সইতে পারেনি একদল স্বেচ্ছাসেবী। ফলে ১০ জন প্রকৃতিপ্রেমী মুহুর্ত্বেই নেমে পড়ে রাবার ড্যামকে পরিচ্ছন্ন করতে। ১৭ মার্চ ২০২৩ ,শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটানা সাড়ে ৩ঘন্টা কাজের মধ্য দিয়ে রাবার ড্যামের অস্তিত্ব ফিরিয়ে আনে সেচ্ছাসেবীরা।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বকুল চন্দ্র চাকমা স্বেচ্ছাসেবীদের কাজের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রতি বছর বৈসাবি উপলক্ষে চেঙ্গী নদীর রাবার ড্যাম এলাকায় ফুল পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এবছর ড্যাম এলাকা ময়লা আবর্জনার স্তুপে পরিনত হয়েছিলো। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলা বন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে এমন কাজ সত্যিই প্রসংশনীয়।
স্বেচ্ছাসেবীরা জানায়, পানছড়ি বাজারের পাশ দিয়েই চেঙ্গী নদী বয়ে যাওয়ায় বাজারের সব আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এই নদীতে। আর বাজার থেকে সাড়ে ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রাবার ড্যাম। ফলে এই আবর্জনাগুলি গিয়ে জমাট বাঁধছে সেখানে। খাগড়াছড়িতে এই রাবারড্যামটি বহুল পরিচিত। প্রতিদিন এখানে দর্শনার্থীরা বেড়াতে আসে। কিন্তু বর্তমানে প্রকৃতির এমন বহাল দশায় দর্শনার্থীরা আগ্রহ হারাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও পত্র-পত্রিকায় বারবার এই বিষয়টি জানান দেয়া হলেও গত ৬ মাসেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই আমরা ১০ জন প্রকৃতিপ্রেমী সেচ্ছায় পুরো রাবার ড্যামকে পরিচ্ছন্ন করি। আমরা আশারাখি প্রশাসন এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিবে।