পানছড়িতে ছড়াকচুর বাজার দাম কম হওয়ায় হতাশায় কচু চাষীরা
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক,পানছড়ি, খাগড়াছড়ি :পার্বত্য খাগড়াছড়ির পানছড়ির অনাবাদি পাহাড়ি পতিত জমিতে গত এক দশকে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার হাত ধরে ছড়া কচুর চাষ হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও পাহাড়ে পাহাড়ে কচু চাষিরা কচুর ফলন ঘরে নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলো। বাজার দাম ভালো না থাকায় হতাশায় কচু চাষিরা।
স্থানীয়রা কৃষকরা জানান, বর্ষার শুরুতে পাহাড়ে জুমচাষে ধান ও অন্যান্য সবজির পাশাপাশি পানছড়িতে কয়েক হাজার কৃষক পাহাড়ের ঢালুতে কচুমুখী চাষ করেছেন। অন্যান্য বছর কচুর ভালো দাম পেলেও এ বছর লোকসানের পালা। পানছড়ি উপজেলার উমরপুর,উল্টাছড়ি, লোগাং, পুজগাং, ছনটিলা, দমদম, ফাতেমা নগর, কাশিপাড়া,মদন কার্বারী পাড়া,পাইয়ং পাড়া, মরাটিলা, এলাকায় কচুমুখী চাষী শেফালী আক্তার, রিপন ত্রিপুরা, কালা চাকমা, জাহাঙ্গীর আলম, সজল চাকমা, ফারুক হোসেন ও মো. শফিকুল ইসলাম সহ অনেকের সাথে আলাপকালে জানায়,অন্যান্য ফসলের তুলনায় কচুমুখী চাষে আয় বেশি হওয়ায় অনেকেই কচু চাষ করেছেন। অধিকাংশই ভালো ফলন হয়েছে, কিছু কিছু কচু ক্ষেতে কচুছড়ায় দাগও পড়েছে।কচু গাছ মরার আগেই কচু ছড়া উত্তোলন শুরু হয়েছে। তবে বাজারে নায্য দাম না পাওয়ায় লোকশানে আছি।
মধুমঙ্গল পাড়ার নুতন ধন চাকমা জানান, প্রতি কানি (৪০ শতক) জমিতে ৭০ থেকে ৮০ মন ছড়া কচু উত্তোলন করা হয়েছে। বীজ বপনের জন্য পাহাড়ের মাটি তৈরী ও বীজ বপনে যে পরিমান খরচ হয়েছে। কচুর বাজার দাম না থাকায় লোকশান গুনতে হচ্ছে। প্রতিকেজি ছড়া কচু জমি থেকে তুলে ঘড় পর্যন্ত আনতে খরচ হয়েছে ১২ টাকা। শুধুমাত্র জমি থেকে কচু উত্তোলনেই প্রতি কেজিতে পারিশ্রমিক দিতে হয়েছে ৫ টাকা। গাড়িভাড়া টেক্স দিয়ে বাজারে এনে তা ১০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কচু চাষী ও মৌসুমি ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম,রমজান আলী,নে¤্রাচাই মারমা জানান, প্রতিবছর মৌসুমে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হাট থেকে কচুমুখী কিনে ঢাকা চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। এবারও আগাম কিছু কচু ক্ষেত ক্রয় করে বিপাকে পড়েছেন। শহরের আড়তে কচুর চহিদা থাকলেও দাম কম দিচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ছড়া কচুর দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
উপজেলা উপ সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা অরুনাংকর চাকমা জানান, কচুর ফলন ভালো হলেও বপন ও উত্তোলন খরচের টাকা বাদ দিলে কৃষক নায্য দাম পাচ্ছেন না। এভাবে দরপতনে আগামীতে কচু চাষে কৃষক উৎসাহ হারাবে। এছাড়াও দাম কম হওয়ায় অনেক কচু চাষী এখনোও কচু তুলছেন না। নির্ধারিত সময়ে কচু উত্তোলন না হলে হয়ত জমিতেই তা নষ্ট হবে।