চট্টগ্রাম :
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল রয়েছে ৪৪ টি। এসব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বা না করার অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন বানচাল করা বা অন্যকে নির্বাচন করতে না দেওয়ার অধিকার কারো নেই। আইনত তা কেউ করতে পারেন না।
রবিবার ( ২৬ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রামে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান ।
তিনি বলেন, কেউ যদি নির্বাচন বানচাল করতে চায় বা অন্যকে নির্বাচন করতে বাধা দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ নির্বাচন না করার অধিকার তাদের একক কিংবা দলীয় সিদ্ধান্ত। তাই বলে কাউকে বাধা দেওয়া যাবে না। ভোটের পরিবেশ সৃষ্টিতে যা যা দরকার সেদিকে আমরা নজর দিচ্ছি। নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কোনো ধরনের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও শিথীলতা প্রদর্শন করা যাবে না। দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। যদি কারো পক্ষপাতমূলক আচরণে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয় তাহলে তিনিই দায়ী থাকবেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে- আমরা সুষ্ঠু অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই এবং এর জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে যা যা দরকার সবই করা হবে।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে তাতে কমিশনের করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে আনিছুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে কেউ এখনও শঙ্কা প্রকাশ করেনি। এরই মধ্যে ছোট-বড় বিভিন্ন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। এতে মনে হচ্ছে, এবারের নির্বাচনে অনেকেই মাঠে থাকবেন এবং প্রতিদ্ব›দ্বীতাও হবে। এই নির্বাচন শুধু আমরা আমাদের চোখ দিয়ে দেখছি না। বিশ্ববাসীও দেখছে। কাজেই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার কোনো বিকল্প নাই। যে কোনো মূল্যে গ্রহণযোগ্য করতে হবে।
তবে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব দায়িত্ব ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশনের বা কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা নির্বাচন করবেন- সেই প্রার্থী, দল, সমর্থক বা তার নেতাকর্মীদের করতে হবে। তবে ভোটারদের কোথাও ভয়ভীতি দেখানো হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেবে।
বিএনপি নির্বাচনে এলে তফসিল পুনর্বিবেচনা করা হবে কি-না এমন প্রশ্নে আনিছুর রহমান আরও বলেন, আমরা এখনও কারো কাছ থেকে কোনো আবেদন পাইনি। যদি কেউ নির্বাচনে আসে বা নির্বাচনের সময় নিয়ে যদি কারো কথা থাকে তবে সেক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করবো। সেই বিবেচনা করার মত যথেষ্ট সময় আমাদের আছে।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেয়ার আগে সার্কিট হাউসে আয়োজিত সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, বিজিবি-র রিজিওনাল কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজিদুর রহমান, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুছ আলী, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এনামুল হক প্রমুখ।