Breakingচট্টগ্রাম অঞ্চলসারাদেশ

চট্টগ্রামে পাহাড় কাটা রোধে সতর্কীকরণ

চট্টগ্রাম:
আদালত ও সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় খেকোরা নানা কৌশলে পাহাড় কেটেই যাচ্ছে। পরিবেশ ধ্বংসকারিদের মধ্যে নামে বেনামে সমাজের বিভিন্ন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নেতা, পাতি নেতারাও জড়িত। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগনও প্রকাশ্যে এবং অপ্রকাশ্যে জড়িত রয়েছেন এই পাহাড় ধ্বংসের পেছনে। অনেক সময় সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাও ( যেমন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) উন্নয়নের নামে পাহাড় কেটেছে।

 

 

চট্টগ্রামের পরিবেশবাদী সংগঠন সহ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে পাহাড় কাটা, জলাশয় ভরাট , খোলা জায়গায় বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নির্মানের বিরুদ্ধে সভা-সমাবেশ ও আন্দোলন হচ্ছে। চট্টগ্রামে পাহাড় ধ্বংস রোধে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ থেকে এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে আদালত পাহাড় কাটা রোধে চট্টগ্রামে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে আদেশ দেন। সেই আদেশ বাস্তবায়ন করতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন মাঠে নেমেছে।

 

 

২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ সোমবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মহানগরের বায়োজিদ লিংক রোড সংলগ্ন এলাকা সহ ২৬ টি পাহাড়ে ও পাহাড়ের পাদদেশে দৃশ্যমান সতর্কীকরণ সাইন বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে।

 

 

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পাহাড় খেকোরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাহাড়কাটা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে এসব বিজ্ঞপ্তি দেখে অন্তত জনসাধারণ পাহাড় কাটার বিষয়ে সচেতন হবে। পাহাড়ে অবৈধ দখল ও কাটতে দেখলে তারা সরাসরি থানায়, পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন।পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

 

জেলা প্রশাসনের সুত্রে জানান, বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের মালিকানাধীন ১৬ টি এবং ব্যক্তি মালিকানা ধীন প্রায় ১০ টি পাহাড় সহ সর্বমোট ২৬ টি পাহাড়ে প্রায় ৬৫৫৮ টি অবৈধ বসবাসকারী পরিবার ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে। গত ৮ আগষ্ট অনুষ্ঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৭তম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের ৭৬১৬/২১ রিট পিটিশন আদেশ মোতাবেক পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে মাঠে নেমেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করলে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুসারে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

 

 

জেলা প্রশাসক বলেন, পাহাড় ধসের বিষয়ে মাইকিং , লিফলেট বিতরণ ও সংবাদ ও টিভি চ্যানেল এর মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে পাহাড় কাটার দায়ে প্রায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে এবং পাহাড় কাটা প্রতিরোধ করতে নিয়মিত মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়াও সংশিষ্ট সরকারি সংস্থা নিজ উদ্যোগে পাহাড়ে অবৈধ ভাবে বসবাস কারীদের যাতে সরিয়ে ফেলে সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নগরীর বায়েজিদ লিংকরোড ও জঙ্গল সলিমপুর সংলগ্ন পাহাড়, পলিটেকনিকেল হল্ট স্টেশন সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ফৌজি ফ্লাওয়ার মিল সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, ষোলশহর স্টেশন সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, ফয়’স লেক এলাকার ১, ২, ৩ নং ঝিল সংলগ্ন পাহাড় , মতিঝর্ণা ও বাটালিহীন সংলগ্ন পাহাড় , লেকসিটি আবাসিক এলাকার সংলগ্ন বিজয় নগর, বাটালি হিল ও মতিঝর্ণা অংশ, ফিরোজ শাহ হাউজিং এস্টেট সংলগ্ন পাহাড় সহ বিভিন্ন এলাকায় এসব সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড লাগানো হয়।

Related Articles

Back to top button