খাগড়াছড়ি ও পানছড়িতে আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে শত শত ঘরবাড়ি ও মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষতি

স্টাফ রিপোর্টার , খাগড়াছড়ি :
হঠাৎ পাহাড়ের অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি পৌরসভার নিচু এলাকাও পানছড়ি উপজেলার কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার দিবাগতরাত থেকে পানছড়ি ও পার্শ্ববর্তী উজান এলাকায় টানা ভারী বর্ষণের পর চেঙ্গি নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে গিয়ে শহরের নিচের বাজার, মেহেদীবাগ, গঞ্জপাড়া ও পানছড়ি উপজেলার দমদম, ইটখলা ও পুজগাং সহ আশপাশের শত শত ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে কয়েকশ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে এবং আসবাবপত্র সহ গৃহস্থালির জিনিসপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
খাগড়াছড়ি সদরের নিচের বাজারের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, “সকালে দোকানে এসে দেখি নদীর পানি দোকানের কাছে চলে এসেছে। মালপত্র গুছানোর আগেই দোকানে পানি ঢুকে যায়।” মেহেদীবাগের সোহেল রানা জানান, “হঠাৎ পানি ওঠায় আসবাবপত্রের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পুরো মেহেদীবাগ এলাকা পানিতে ডুবে আছে।”
এদিকে আকস্মিক বর্ষণে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছেন পানছড়ির দমদম, ইটখলা, পুজগাং ও বাজারের নুরানী মাদরাসা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা সহ ছড়া ও নদী পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় ২০ পরিবার। ইসলাম পুরের মৎস্য চাষি ফারুক ড্রাইভার, রাফি , কালানাল এলাকার আনোয়ার হোসেনদের ১৫ টি পুকুর প্লাবিত হয়েছে। লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছিলেন। প্রায় ১৫ টন বিভিন্ন প্রজাতির কার্পজাতীয় মাছ এবং ৪টি পুকুরে ৩৫ হাজার পাঙ্গাস ও ১ লাখ মনোসেক্স তেলাপিয়া মজুদ ছিল, যেগুলো এ মাসের শেষের দিকে বাজারজাত করার কথা ছিল।
কিন্তু শনিবার রাতের ভারী বর্ষণে পুকুরের বাঁধ ভেঙে সব মাছ ভেসে যায়। এতে মৎস চাষীদের আনুমানিক ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়। অনেক মৎস চাষীই নিঃস্ব হয়ে দিশেহারা অবস্থায় পড়েছেন।
এছাড়াও অতি বৃষ্টির ফলে পাহাড়ী ঢলে আরও অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও কৃষক ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন, যার সঠিক হিসাব এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা জানান, দুর্গতদের সহায়তা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।