খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় দুই থানায় তিন মামলা
আসামি দেড় হাজারের বেশি

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ির গুইমারা ও সদর উপজেলায় সাম্প্রতিক সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলায় দেড় হাজারেরও বেশি অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি মামলা এবং একইদিন রাতে গুইমারা থানায় আরও দুটি মামলা দায়ের করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী এবং খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা।
গুইমারা থানার ওসি জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সেখানে ব্যাপক সহিংসতা ঘটে। এসময় সেনাবাহিনী ও পুলিশের ওপর হামলা, অগ্নি সংযোগ, ভাঙচুরের ঘটনাসহ ধানখেত থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে—এর মধ্যে হত্যা মামলায় ১০০ জন অজ্ঞাত আসামি এবং হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় আড়াইশ জন অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। নিহতদের পরিবার বা ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা না করায় পুলিশ নিজেরা বাদী হয়ে মামলা করেছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে, খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার মহাজন পাড়া, স্বনির্ভর ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ৭০০ থেকে ৮০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে জেলার সিঙ্গিনালা এলাকায় মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে খাগড়াছড়ি। ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ডাকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। তবে পরবর্তী সময়ে চিকিৎসক দলের মেডিকেল পরীক্ষায় ওই কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
ধর্ষণ অভিযোগকে ঘিরে শুরু হওয়া এই অস্থিরতা কয়েক দিনের মধ্যে সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে রূপ নেয়। গুইমারায় তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় পুলিশ মোট তিনটি মামলা দায়ের করেছে, যাতে আসামি করা হয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি অজ্ঞাত ব্যক্তিকে।