আলোর মুখ দেখেনি খাগড়াছড়ির তিনটি প্রাথমিক ছাত্রাবাস
নদী ভাঙ্গন ও নির্মাণ ত্রুটিতে অভিযোগ
চেঙ্গী দর্পন,স্টাফ রিপোর্টার,খাগড়াছড়ি:
২০১২ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অর্থায়ণে ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশলীর (এলজিইডি) তত্ববধায়ণে খাগড়াছড়ির পানছড়ি,মানিকছড়ি ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় দুই কোটি টাকার অধিক অর্থায়নে তিনতলা বিশিষ্ট ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হয়। জনবল নিয়োগ না হওয়ায় গত এক দশকেও ছাত্রাবাসগুলো আলোরমূখ দেখেনি। এছাড়া নদীর পাড়ে ভবন নির্মাণ ও কাজে ত্রুটির ফলে ভবনগুলো এখন নদীগর্ভে এবং গাইডওয়াল ভেঙ্গে বিলিন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পানছড়ি ,মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুর্গম এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের অনায়াসে পড়ালেখার সুবিধার্থে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিটি ছাত্রাবাস নির্মাণে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করেন। স্কুল সংলগ্ন ভূমিতে ৩ তলা বিশিষ্ট ভবনে পানি ও বিদ্যুৎ সুবিধায় বিদ্যুৎ লাইনের পাশাপাশি সৌর বিদ্যুৎ ও জেনারেটর স্থাপন সহ সকল সুবিধা থাকা স্বত্ত্বেও গত এক দশকেও ছাত্রাবাস পরিচালনায় এখনো জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
ছাত্রাবাসের নির্মান কাজের ণুরুতেই নিন্মমানের কাজ ও ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ থাকা সত্বেও ১০ বছর খালি পড়ে আছে পানছড়ি উপজেলা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংলগ্ন ছাত্রাবাসটি। নির্মাণ ত্রুটিতে ভবনের নিরাপত্তা দেয়াল ভেঙ্গে পড়েছে। কলোনীপাড়া নিবাসী এনামুল হক জানায়, ঝুকির মাঝে আছে ছাত্রাবাস সংলগ্ন বসবাসকারীরা। প্রসাশন কোন উদ্যোগ গ্রহন না করায় আতংকে দিনপার করছে সেখানকার লোকজন। যে কোন মুহুর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এছাড়া ও প্রতিটি ছাত্রাবাসের আসবাবপত্র, সোলার প্যানেল, জেনারেটর নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আগেই! এক কথায় বলতে গেলে ইটের গাঁথুনি ছাড়া ভবনে এখন আর ব্যবহার উপযোগী কিছুই নেই।
অযত্ন-অবহেলার পাশাপাশি লক্ষ্মীছড়ি ছাত্রাবাসটি ধুরং খালের কূলে হওয়ায় ভাঙ্গনেরমূখে পড়েছে। উপজেলার দুর্গম জনপদ বার্মাছড়ি থেকে বাজারে আসা ধীমান চাকমা আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের এলাকায় আগামী ৫০ বছরেও বিদ্যুৎ পৌঁছবেনা, ভালোমানের স্কুলও নেই! উপজেলা সদরের ছাত্রাবাসটি চালু হলে আমার মতো অসচ্ছল পরিবারের ছেলে-মেয়েরা হোস্টেলে থেকে ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ হতো। বাজারে আসা-যাওয়ার পথে সুদৃশ্য ভবন দেখি। কিন্তু তালাবদ্ধ ভবন এক দশকে যৌবন হারিয়ে এখন মরীচিকায় বিবর্ণ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ইসতিয়াক ইমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছাত্রাবাসটি নদীর পাড়ে হওয়ায় ঝুঁকি বাড়ছে। ইতিমধ্যে নদীর পাড়ে ব্লক বসানো হয়েছে। সামনে বরাদ্দ সাপেক্ষে গাইডওয়াল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
খাগড়াছড়ি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন পানছড়ি সহ ৩টি অব্যবহৃত ছাত্রাবাস চালুকরণ ও সংস্কার বিষয়ে সংবাদিকদের বলেন, ছাত্রাবাসগুলো চালুকরণে জনবল নিয়োগ ও সংস্কারের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হয়েছে।