আইন সংশোধন করে হলেও লামা-র ৩৬ ম্রো পরিবারকে বন্দোবস্তি দেয়া হবে
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, লামা , বান্দরবান :
‘লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড এবং কিছু ম্রো ও ত্রিপুরাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের চলমান ভূমিবিরোধ নিরসনে এবার বিতর্কিত ভূমি পরিদর্শন করলো পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র ২নং সাব-কমিটি। বুধবার বেলা ১১টায় লামার সরই এলাকায় এই ভূমি পরিদর্শন করেন। এদিনের পরিদর্শন দলে ছিলেন, রাঙামাটি সংসদ সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার এমপি, রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল টিপুরা ও সংরক্ষিত (পার্বত্য) নারী সাংসদ বাসন্তি চাকমা।
এ সময় সাব কমিটির নেতৃবৃন্দ ‘ম্রো ত্রিপুরা, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির লোকজন, সংশ্লিষ্ট হেডম্যান, কারবারী ও জন প্রতিনিধি দের বক্তব্য শুনেন।
তাছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র ২নং সাব-কমিটির নেতৃবৃন্দকে বিরোধপুর্ণ ভূমির বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, লামা উপজেলা চেয়ারম্যান, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান, সরই ইউপি চেয়ারম্যান বিরাজমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা জানান, ইতোপূর্বে জেলার শীর্ষ স্থানীয়দের প্রস্তাবনানুযায়ী ৩৬টি পরিবারকে ৫একর করে ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শ্মশানের জন্য মোট ২০০ শত ৬ একর জমি প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। তবে ম্রো ত্রিপুরাদের একাংশ প্রস্তাবটি নাকচ করে। এর ফলে বিরোধটি সমাধান হচ্ছে না।
সাব কমিটি ২ এর আহ্বায়ক ও রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এই বক্তব্য শোনার পর বলেন, স্থানীয়ভাবে গ্রহণকৃত প্রস্তাবটি ভালো ছিলো। তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা জানলাম দেখলাম। যেহেতু পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্পাদিত শান্তি চুক্তির পর থেকে ভূমি বন্দোবস্তি বন্ধ,বিষয়টি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মাধ্যমে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে এই ৩৬টি ম্রো পরিবারকে বন্দোবস্তি দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়টি দ্রত সময়ে মীমাংসা করা দরকার অন্যথায় সময় যত গড়াবে সবাই তত ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
এদিকে গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাথোয়াইচিং মারমা এই ভূমি বিরোধের জন্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ও লামা রাবারকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, উভয় প্রতিষ্ঠানের জমি পরিমাপ করা হলে বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।
লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল সাব কমিটিকে জানান, এই বিরোধ মীমাংসায় একাধিক বৈঠক হয়েছিল। সেখানে ম্রো ত্রিপুরারা সব কিছু মেনে নেয়, কিন্তু পরবর্তীতে ৩য় কোনো পক্ষের ইন্ধনে সিদ্ধান্ত থেকে সরে যাওয়ায় স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, লামা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সরই ইউনিয়নের রেংয়েনপাড়া, লাংকমপাড়া ও জয়চন্দ্র পাড়ার ৩৫০ একর জমি নিজেদের বলে দাবী করে আসছে কিছু ম্রো ত্রিপুরা। এ ঘটনায় দেশে-বিদেশে তোলপাড় হয়। লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড কোম্পানির অভিযোগ, ম্রো ও ত্রিপুরাদের একটি গোষ্ঠি পরিকল্পিতভাবে এসব জমিতে আগুন দিয়ে আলোচনায় আসে। এ ঘটনার ঠিক এক মাসেই সংসদীয় উপকমিটি বিষয়টি তদন্তে সেখানে যায়।