বিলাইছড়িতে আবিস্কৃত সেরা ৫ টি ঝর্ণার মধ্যে অন্যতম ১ টি হলো ধূপ পানি ঝর্ণা
চলুন বেড়াই ....ধূপপানী ঝর্ণা
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটি ( বিলাইছড়ি) :
প্রকৃতির রানী বলা হয় রাঙ্গামাটিকে।প্রকৃতির সৌন্দর্য ঘেরা বিলাইছড়ি উপজেলাও। এ উপজেলার মোট আয়তন ৭৪৫.১২ বর্গ কিলোমিটার মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩৫০০০ হাজারের উপরে।ভারত ও ময়ানমার দুই দেশের সীমানা রয়েছে এই উপজেলায়।রয়েছে বিভিন্ন সম্প্রাদায়ের বাসিন্দা। সামাজিক সংস্কৃতিতে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন আচরন, ভিন্ন ভিন্ন পোশাক পরিচ্ছদ, খাবার- দাবারে রয়েছে ভিন্নতা।তাদের বসবাস পাহাড়ের নীচে,নদীর ধারে, ছড়ার পারে কিংবা সুউচ্চ পাহাড়ে।এজন্য বিলাইছড়ি উপজেলা তো নয় যেন এক মায়াবী স্বর্গ।
প্রকৃতি যেন আপনাকে ডাকছে,বলছে দেখ আমাকে কেমন লাগছে। আমিও তোমাদের সঙ্গে মিতালী করতে চাই। খাল, বিল, নদ, নদী, পাহাড় লেক সবকিছু যেন একসাথে মিলন বন্ধন। কর্ণফুলি লেক থেকেই উৎপত্তি হয়েছে ৫ টি শাখা নদী তার মধ্যে ১ টি নদী হলো রাইংখ্যং নদী।সেই নদীর উৎস হচ্ছে সু-উচ্চ পাহাড়ের ঝিঁড়ি,ঝর্ণা,ছড়া থেকে।পাহাড়ের রয়েছে শত শত ছোট-বড় অনেক ঝর্ণা।তেমনি ভাবে রয়েছে অনেক বড় বড় ঝর্ণাও । যেমন-নকাটা ছড়া ঝর্ণা,ছিনা মৌন ঝর্ণা,গাছ কাটা ছড়া ঝর্ণা,মুপ্যা ছড়া ঝর্ণা, ধূপ পানী ঝর্ণা সহ অসংখ্য ঝর্ণা।
সব ঝর্ণা থেকে আলাদা দেখতে সুন্দর হলো ধূপপানি ঝর্ণা। প্রায় ২০০ ফুট উঁচু হতে রিমঝিম রিমঝিম করে সবসময় বৃষ্টি মত পানি পড়তে থাকে। ভিজলে মূহুর্তের মধ্যেই শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়।চৈত্র মাসে খরা রোদেও কোন রকম পৌঁছাতে পারলে সব দূঃখ ভুলে যায় ঝর্ণার পানি পরশ করলে।গ্রীষ্মকালেও তীব্র শীত অনুভূত হয় এ ঝর্ণায়। খুব বেশি ঠাণ্ডা অনুভুত হয়। যা বরকল উপজেলার শুভলং ঝর্না এবং অন্যান্য ঝর্ণাকেও হার মানাবে। হার মানাবে দেশের অন্যান্য বড় বড় ঝর্ণাকে।এজন্য মন শুয়ে যায় এই ধূপপানি ঝর্ণায় এলে।
নামের উৎপত্তি : ধূপপানি ঝর্না।পাহাড়ীদের ভাষায় ধূপ মানে হচ্ছে সাদা অর্থাৎ উপর থেকে পানি পড়তে একদম সাদা দেখায়।যার নামের অর্থ হলো সাদা পানি। ধবধবে স্বচ্ছ সাদা পানির ঝর্না।
অবস্থান : ধূপপানি ঝঁণা বিলাইছড়ি উপজেলার ৩নং ফারুয়া ইউনিয়নে অন্তর্গত ওরাছড়ি গ্রামে অবস্থিত।যেতে হলে উলুছড়ি হয়ে যেতে হবে।
কিভাবে যাবেনঃ-ঢাকা হতে ইউনিক,ডলফিন, শ্যামলী ও শরীফ এন্টারপ্রাইজ কোচে করে রাঙ্গামাটির তবল ছড়ি নতুবা রিজার্ভ বাজার বোট সকাল ৭ টা কিংবা বেলা ২ টা এবং ৩ টায় বিলাই ছড়ির পথে লঞ্চ পাওয়া যাবে। অন্যদিকে ঢাকা হতে সরাসরি কাপ্তাই হয়ে বিলাইছড়িতে ইঞ্জিন চালিত লোকেল বোটে ভাড়া নেবে জন প্রতি ৭০ টাকা, রিজার্ভ ভাড়া হলে (কান্ট্রি বোটে) প্রতি বোট ১৫০০/- টাকা নিবে।
থাকা ও খাবার ব্যবস্থা : বিলাইছড়ি উপজেলায় নিলাদ্রী রিসোর্ট বাদেও রয়েছে বোর্ডিং হোটেল মোটেল।ভাড়া পড়বে ৫০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত।
সেখানে রাত্রি যাপনের পর ভোর সকাল ৭ টায় কান্ট্রি রিজার্ভ বোটে ভাড়া পড়বে মাত্র ১৫০০ টাকা যেতে হবে ৩ নং ফারুয়া ইউনিয়ন উলুছড়ি হয়ে। সেখানে গাইডার রয়েছে। হেঁটে যেতে হবে প্রায় ২ ঘন্টা। রাঁস্তায় যাওয়া পথে দেখা মিলবে,হরিন,বন মোরগ, বন বিড়াল,উড়ন্ত কাঠ বিড়ালি সহ অসংখ্য পশু পক্ষির ও তাদের কলকাকলি। তবে জোঁকও রয়েছে। তারপরে দূর থেকে শোনা যাবে বিকট শব্দ।
গাছ ও বাঁশের ফাঁকে একটু একটু দেখা যাবে ঝরনা। পৌছানোর পর সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে। এবার ইচ্ছামত দেখা গোসল করা আর সেলফি নেওয়া।সঙ্গে প্রিয়জন পাশে থাকলে তো কথাই নেই। যা ছোঁয়ার পরে মনের আনন্দে দেখা ও গোসল করা পরে পুনরায় ফিরতে হবে বিকালে সদরে।সেখানে রাত্রি যাপনের কোন ব্যবস্থা নেই।