স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের আন্ধামানিক ঘাট এলাকায় প্রায় দেড়মাস যাবৎ নিয়মিত আটকা পড়ছে বিভিন্ন পণ্যবাহী কোস্টার জাহাজ। এ পয়েন্টে কয়লা, সার, পাথর সহ অন্যান্য পণ্যবাহী ২০টি কোস্টার জাহাজ আটকে আছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাওয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌপথে নিয়মিত চলাচল করে বিভিন্ন পণ্যবাহী এই কোস্টার জাহাজ। বর্ষার পানি কমতে শুরু হলেই শুকনো মৌসুমে পদ্মার বুকে ছোট-বড় অনেক ডুবোচর জেগে উঠে। এই চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচরের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে পদ্মার নাব্য সংকট। হরিরামপুরের ধূলশুড়া এলাকা থেকে লেছড়াগঞ্জের সেলিমপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার নদী পথে এই নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। এতে পানির প্রয়োজনীয় গভীরতা না থাকায় চট্টগ্রাম, মোংলা ও নারায়ণগঞ্জ নৌবন্দর থেকে ছেড়ে আসা উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি তেলবাহী ও বিভিন্ন মালবোঝাই জাহাজগুলো সরাসরি নগরবাড়ী ও বাঘাবাড়ী বন্দরে যেতে পারছে না। হরিরামপুর উপজেলা পয়েন্টে আন্ধারমানিক ঘাট এলাকায় গিয়ে জাহাজগুলো আটকা পড়ে যাচ্ছে।
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ বৃহস্পতিবার সরেজিমনে দেখা যায়, এই ঘাটে আটকা পড়েছে কয়লা, ক্লিংকার (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) ও সার বোঝাই করা ২০টি জাহাজ। সেখানে শতাধিক শ্রমিক বিভিন্ন জাহাজ থেকে কয়লা, ক্লিংকার ও সার নামিয়ে ছোট জাহাজ ও বাল্কহেডে বোঝাই করছেন। বোঝাইয়ের পর বাল্কহেড গুলো সেখান থেকে পাবনার নগরবাড়ী ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর অভিমুখে ছেড়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা এমভি এস টি এস- ৪ এর সুখানি আমিনুল জানান, তারা পাবনা নগর বাড়ি সরকারি টিএসপি সার নিয়ে যাবেন। কিন্তু নদীতে পানি কম হওয়ায় হরিরামপুরের আন্ধারমানিক ঘাটে চারদিন যাবৎ আটকা পড়ে আছেন। এই সময়ে সার কৃষকের জন্য অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্য। কিন্তু নাব্য সংকটে জাহাজগুলো আটকে আছে। এখন ছোট বাল্কহেডে লোড করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে লোড আনলোডে সময় ও খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এমভি বসুন্ধরা -৪ জাহাজের সুখানি আল ইমরান শেখ জানান, তারা দুই দিন যাবৎ এখানে আটকে আছেন। নদীতে তুলনামূলকভাবে পানি অনেকটাই কম। তাই কিলিংকারগুলো বাল্কহেডে লোড দিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই মৌসুমে প্রতিবছরই এই ধরণের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
আন্ধারমানিক ঘাটের ট্রলার চালক হাশেম জানান, প্রতি বছর এই সময়টা এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে ডুবোচর জেগে উঠে। ফলে নৌযান চলাচলে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হয়। প্রায় দেড়মাস যাবৎ এখানে ২০/২২ টি জাহাজ ভীড়ে আছে। নদীতে পানি কম থাকায় জাহাজগুলো আটকে পড়েছে।
বিআইডাব্লিউটিএ’র আরিচা শাখার ড্রেজিং ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আহমেদ জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবগত রয়েছেন। এক সপ্তাহ আগে ড্রেজিংয়ের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই প্রাথমিকভাবে দুটি ড্রেজার বসিয়ে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করা হবে।