চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, শ্রীনগর, মুন্সিগঞ্জ : শ্রীনগরে দেদারছে ভড়াট হচ্ছে কৃষিজমি ও জলাশয়। উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়নেই প্রায় শতাধিক কৃষি জমি ও জলাশয় ভড়াট হয়েছে। ভড়াটের জন্য তৈরি করে রাখা হয়েছে আরো বেশ কিছু জমি ও পুকুর। এসব ভড়াট কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে ৪টি অবৈধ ড্রেজার।
কোলাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ২টি গ্রুপের মধ্যে বৈরিতা থাকলেও অবৈধ এই বানিজ্যের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে রয়েছে সমাঝোতা। অপরদিকে উপজেলা প্রশাসন সকল ইউনিয়নে অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালিত করলেও অজ্ঞাত কারণে এই ক্ষেত্রে তারা নিরব।
১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ বুধবার দুপুরে কোলাপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখা গেছে একাধিক রাস্তা খুড়ে অবৈধ ড্রেজারের পাইপ টানা হয়েছে। জোর করে বাড়ির উপর দিয়ে লাইন টানার করণে নিজ বাড়িতেই চলাচল করতে পারছেনা বাসিন্দারা। ড্রেজারের বুস্টারের বিকট শব্দে অতিষ্ট মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। অনেকেই প্রশ্ন তুলেন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদ করলেও গত ১ মাসে এখানে কোন অভিযান পরিচালিত হয়নি।
শ্রীনগর উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়নে অবৈধ বালু ভড়াট নিয়ে দ্বন্ধের কারনে একাধিক গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকবার মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে দীর্ঘদিন ওই এলাকায় ড্রেজার বানিজ্য বন্ধ ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে লৌহজং উপজেলার এক স্থানীয় সরকার প্রতিনিধির মধ্যস্থতায় ড্রেজার ব্যবসা নিয়ে দুই গ্রুপের যৌথ সভায় কে কত টাকা নিবে সেই বিষয়ে সমঝতার সিদ্ধান্ত হয়। এর পর থেকে লৌহজংয়ের ওই নেতা প্রশাসনকে ম্যানেজ সহ ৪টি ড্রেজার পরিচালনার দায়িত্ব নেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উত্তর কোলাপাড়া,গাবতলা,দোগাছি,ওয়াসা রোড সহ বেশ কয়েকটি স্থানে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন মৌজায় প্রায় শতাধিক কৃষি জমিতে বালু ভড়াটের জন্য পকেট করে রাখা হয়েছে। বেশ কিছু জমি ইতি মধ্যে ভড়াট করা হয়েছে। বাকিগুলোতে ড্রেজারের পাইপ স্থাপনের কাজ চলছে। পকেট করা এসব জমির বেশীর ভাগই ধানী জমি। এগুলোতে এবছরও ধান রোপন করা হয়েছিল। জলাশয়গুলো কেন ভড়াট করা হচ্ছে তা বলতে পারছেন না ড্রেজারে নিযুক্ত শ্রমিকরা। এসব এলাকায় চলাচলের রাস্তা খোরার কারনে প্রতিনিয়ত সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
কোলাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, ড্রেজার বন্ধ করা দরকার। কিন্তু ড্রেজার বন্ধে কোন রকম ফলাফল পাই না। এ কারণে ড্রেজার চালানোর বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে।
শ্রীনগর উপজেলা সহকারী কমিশানর(ভূমি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, কোলাপাড়া ইউনিয়নে প্রশাসন ৩ বার অভিযান পরিচালনা করেছে,তারপরও অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করা যাচ্ছে না। অচিরেই পুনরায় অভিযান চালিয়ে মূল পয়েন্ট থেকে এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।