Breakingখাগড়াছড়িপার্বত্য অঞ্চলসারাদেশ

পানছড়িতে অটো রিকশার দাপটে পথ চলায় ঝুঁকি

চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক ,পানছড়ি, খাগড়াছড়ি :
অটোরিকশা বা ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ইজিবাইকের দাপটে রাস্তায় -পথ ঘাটে চলাচল কঠিন হয়ে পরেছে।এদিকে প্রতিদিন অটোরিকশা যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে জীবনের ঝুঁকি। এমন অভিযোগ খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলা এলাকাবাসীর।

 

১ জানয়ারী ২০২৩ রবিবার পানছড়ি বাজার ও আশ পাশ এলাকায় পর্যন্ত ঘুরে প্রায় ১২-১৫ শত অটো রিকশা – ইজিবাইকের উপস্থিতি টের পাওয়া গেল। চালকদের সড়কের নিয়ম কানুন জানা থাকায় যত্রতত্র পার্কিং। অন্যান্য যানবাহনের চলাচলে বিঘ্ন ছাড়া ও পায়ে হেটে চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

 

পানছড়ির ৪ টি অটো রিক্সা বা ইজিবাইক মালিক ও চালক সমিতির তথ্য মতে , ৫৮০ টি তালিকাভুক্ত থাকলেও আরোও পাঁচ শতের বেশি অবৈধ যান বাহনের কাছে জিম্মি স্থানীয় বাসিন্দারা। দ্রুত গতিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যাওয়া, যত্রতত্র পার্কিং, যানজট বৃদ্ধি ও অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ সহ এ নিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য অভিযোগ।

 

পানছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক জ্ঞান রঞ্জন চাকমা জানান, বিশেষ করে হাটের দিন পানছড়ি জিরো পয়েন্ট থেকে কলাবাগান ব্রিজ ও চেঙ্গী ব্রীজ পর্যন্ত সব মিলিয়ে এক কিলো মিটারের কম এলাকা পাড়ি দিতে পায়ে হেটেও ৪০-৪৫ মিনিট সময় লাগে। অটোরিকশা ওয়ালারা ফুটপাত সহ রাস্তায় জ্যাম করে দাড়িয়ে থাকে। যার ফলে শুধু শরীরটা নিয়ে হেটে যাওয়াও কঠিন হয়ে পরে।


এ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল কাদের জানায়, বাজারের মুখে অটোরিকশা এলোমেলো রাখায় প্রতি নিয়তই জরুরী সেবার রুগী নিয়ে হিমসিম খেতে হয়। সামান্য ৫০০ গজ রাস্তা পারি দিতে মাঝে মাঝে আধা ঘন্টা সময় লাগে।

 

ইজিবাইক চালক সাইফুল হোসেন বললেন, আমরাতো উপজেলা পরিষদ ও সমিতির স্টিকার নিয়ে চালাচ্ছি। তবে স্টিকার বিহীন প্রায় ৫-৬ শত নতুন ইজিবাইক ও অটোরিকশা ঢুকছে। সেগুলোর কি হবে? অতিরিক্ত অটোরিকশা না থাকলে রাস্তা জ্যাম হতো না।

বয়োবৃদ্ধ মোঃ শাহ আলম। তিনি আগে রিক্সা চালাতেন। বয়স ও যাত্রী অভাবে জীবিকার তাগিদে অটো রিকশা চালান। তিনি বলেন , পায়ে টানা রিকশায় এখন আর যাত্রী উঠতে চায়না। তাই বাধ্য হয়ে বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋন নিয়ে একটি অটো রিকসা কিনেছেন। এমনি প্রতি মাসেই বাড়ছে অটোরিকশা।

লতিবান ইজিবাইক কল্যান সমিতির সভাপতি অমিত চাকমা জানায়, আমাদের ৪ সমিতির বৈধ অটো ছাড়া ও অবৈধ ভাবে আরো ৫ শতাধিক অটো রিকশা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। রাজনৈতিক, সামাজিক ও সর্বোপরি উপজেলা প্রশাশনের ভূমিকা খুবই জরুরী। তানা হলে আগামীতে সমস্যায় পরবেন পানছড়িবাসী নিজেরাই।

 

আগামীতে নয়, এই মুহূর্তেই এইসব অটোরিকশা নিয়ে চরম সমস্যা নিয়ে মুক্তি যোদ্ধা আলী আহাম্মদ বলেন , যাতায়াত ও পরিবহনের জন্য যানবাহন জরুরি একথা যেমনি সত্য, তেমনি অতিরিক্ত ও ভালো না। অটোরিকশাগুলো এখন পানছড়ি র বিষফোঁড়া। এগুলোর যন্ত্রণায় রাস্তা পার হতেও আতঙ্কিত আমরা। যখন তখন উল্টে যাচ্ছে। এর ফলে অবৈধ বিদ্যুৎ খরচ বাড়ছে। গতবছর কম হলেও ২০-৩০ জন পাবেন যারা অটোরিকশা দূর্ঘটনার শিকার। বৈধ অটোরিকশা গুলো রেখে বাকী সব তুলে দেয়া জরুরী। মোটর সাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হতে পারিনা এই অটোরিকশাগুলোর জন্য। যাত্রী নেই তারপরও ছুটছে। এই উপজেলা সড়কের নিয়ন্ত্রণ যে কার তাই এখন প্রশ্নবিদ্ধ। তবে অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বাজারের ও উপজেলার স্ট্যান্ড পরিকল্পিত পূনর্বিন্যাসের প্রয়োজন।

 

পানছড়ি উপজেলা নির্বাহি অফিসার রুবাইয়া আফরোজ বলেন, অটোরিকশা রেজিষ্ট্রেশনের জন্য স্টিকার দিয়েছি। এগুলোর বাইরে সবই অবৈধ । আমি প্রতিটি মাসিক আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে পরিবহন চালক ও মালিক সমিতির নেতাদের এ বিষয়ে বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও অটো চালকদের নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। নিয়ম না মানলে খুব শীঘ্রই এর বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

 

 

Related Articles

Back to top button