গাড়ি চলছে হেলে দুলে ; এক যুগেও গুঁচেনি ছনটিলা রাস্তার দুঃখ
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক ,পানছড়ি ,খাগড়াছড়ি :
সাত কিলোমিটারের রাস্তায় গর্ত আর গর্ত । মাঝে মধ্যে কিছু অংশ জানান দেয় হেরিংবোন্ড ইট সলিংয়ের কথা। অধিকাংশ রাস্তাই তৈরী হয়েছে কাঁদা মাটির বিরাট গর্ত। এমন খারাপ ও বহাল অবস্থা যা নজরে পড়ছে না কারো যেনো দেখার কেউ নেই। চলাচলে দুর্ভাগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের । এ চিত্র পানছড়ি উপজেলার হাসপাতাল সড়ক হয়ে ৩নং সদর ইউনিয়নের অবহেলিত গ্রাম ছনটিলা সড়কের।
স্থানীয়দের অভিযোগ ,সরকার , মেম্বার ও চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়, কিন্তু এ সড়কের কোনো পরিবর্তন হয় না। ভোট এলে সবাই প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু ভোট চলে গেলে এ রাস্তার কথা মনে রাখেন না কেউ। তখন ছনটিলা নামে পানছড়ির মধ্যে যে একটি গ্রাম আছে, রাস্তা আছে ,সে কথা ভুলে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাত কিলোমিটারের রাস্তায় জনপ্রতি ৬০-৮০ টাকা ভাড়া দিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী । সিএনজি, জিপ, মোটর সাইকেল সহ ট্রাকও চলাচল করে এই ভাঙ্গা সড়কে। সব গাড়িই চলছে হেলে দুলে। অনেকে আবার গাড়ি উল্টে যাবার ভয়ে গাড়ি থেকে নেমে ভাঙা সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। প্রায়শই গাড়ি উল্টে যাবার মতো ঘটনাও ঘটে।
স্থানীয় কৃষক সাহেব আলী বলেন, সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার ফলে এলাকার উৎপাদিত শাক সবজি ও কৃষি পণ্য পাশের চেঙ্গী বাজারে ও পানছড়ি সদর বাজারে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিকল্প রাস্তাও নাই। প্রতিদিনের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে গেলে ব্যয় বেড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ১৯৯৮-৯৯ সালে রাস্তাটি ইট সলিং করে তৈরীর একযুগ পারি দিলেও আংশিক সংস্কার করে বৃহৎ অংশ এমনিতেই পড়ে আছে। পুরোনো এই রাস্তাটি দিয়ে আলী চরনপাড়া,কালানাল,আমতলী,ছনটিলা সহ ৮ গ্রামের মানুষের যাতায়াত। রাস্তার এই বেহাল অবস্থায় অনেকেই পায়ে হেটে পারি দেন দীর্ঘ পথ। সাত কিলো মিটারের এ রাস্তা দিয়েই চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ও একটি মাদরাসার শিক্ষক ছাত্র ছাত্রী চলেন। আবার ৮ গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সিনিয়র মাদরাসা এবং কলেজের ছাত্র ছাত্রীরাও সদরে আসে। রাস্তার বেহাল অবস্থার কারনে পোষাক নষ্ট হয় প্রায়ই।
পানছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উচিত মনি চাকমা বলেন,আমি নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। তবে রাস্তাটির অবস্থা খুবই নাজুক ও অনুন্নত অবস্থায় আছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণের যাতায়াত ও জীবন মান পরিবর্তনে কাজ করার জন্য বরাদ্ধ দরকার। ছনটিলা রাস্তা বিষয়ে প্রসাশনকে অবহিত করেছি।
পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব বলেন, আমাদের পার্বত্যাঞ্চলের বসবাসকারী লোকজনের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুদৃঢ় করার লক্ষে মাননীয় সাংসদ এ রাস্তাটি সহ ৯টি রাস্তার কাজের জন্য ২০১৮ সালে ডিও লেটার দিয়েছেন।কেন ও কিসের জন্য আজো রাস্তাটির কাজ হচ্ছে না তা ভাবনার বিষয়।
পানছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী অরুন কুমার দাশ এ প্রতিবেদককে জানায় , মাননীয় সাংসদ ২০১৮ সালের শেষ দিকে ৯টি রাস্তার নাজুক অবস্থার কথা উল্লেখ করে পত্র দিয়েছেন। তার মধ্যে এটি ১ নাম্বারে ছিলো। বিভিন্ন কারনে বাকি রাস্তা গুলোর কাজ হলেও হাসপাতাল সড়ক হয়ে ছনটিলার রাস্তাটির কাজ হয় নাই। এবার পুনরায় আবেদন আসলে এ রাস্তাটি অগ্রাধিকার পাবে।