রাত পোহালেই মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা
চেঙ্গী দর্পন,স্টাফ রিপোর্টার :
ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে বিশ্বের মুসলমানদের আনন্দ উদযাপনের দিন পবিত্র ঈদুল আজহা কাল রবিবার। অব্যাহত অতিমারি এবং দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে বন্যার কারণে সৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশ বিরাজ করলেও ঈদের আনন্দে তা খুব বাদ সাধতে পারেনি। আরবি জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ১০ দিন আগে থেকেই ঈদুল আজহার দিন নির্ধারিত থাকে। এই ১০ দিন নানা রকম পুণ্যকর্মের মধ্য দিয়ে কাটায় মুসলমানরা।
রাত পোহালেই মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ত্যাগের উৎসব। দিনটিতে মুসলমানরা ঈদগাহে দুই রাকাত নামাজ আদায়ের পর স্ব-স্ব আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ ও উট আল্লাহর নামে কুরবানি করেন। আর কুরবানির মাংস আত্মীয়স্বজন ও গরিবদের মাঝে বণ্টন করেন।
এবার ঈদ উদযাপনের আবহ আগেই শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিাঞ্চলের মানুষের আনন্দ একটু বেশিই। কারণ পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এবার রাজধানী ও এর আশপাশে কর্মরতদের বাড়ি যেতে আগের মতো ভোগান্তি নেই। তবে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ সহ বেশ কয়েকটি জেলার মানুষের কাছে এবারের ঈদ অনেকটা নিরানন্দের মধ্য দিয়েই উদযাপিত হবে। কারণ ভয়াবহ বন্যায় এসব এলাকার মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকের ঘর, গোলার ধান বানের পানিতে ভেসে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে যে পরিবারগুলো বাড়ি ফিরতে পেরেছে তারাও বন্যায় ভেসে যাওয়া মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু মেরামত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। বন্যার কারণে আয়-রোজগার হারানো শ্রমিক এবং ফসল হারানো প্রান্তিক কৃষককে সামলে উঠতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তার পরও ঈদের একটি দিন সব মানুষ সাধ্যমতো আনন্দেই কাটাতে সচেষ্ট থাকবে। পরিস্থিতি যত প্রতিকূলই থাকুক না কেন মানুষ ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবে। এ দেশে কোরবানির ঈদ বলে বেশি পরিচিত পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান মর্মবাণীই হলো আত্মত্যাগ। নিজের সামান্যটুকু থেকেও প্রতিবেশী ও আত্মীয়-পরিজনকে বিলিয়ে দেওয়া সেই মহিমাময় ত্যাগের একটি রূপ। হজরত ইবরাহিম (আ.) মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তাঁর নির্দেশে প্রাণপ্রিয় পুত্রকে কোরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। সেই ত্যাগকে স্মরণ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য সারা দুনিয়ার মুসলমানরা পশু কোরবানি করে। চলমান প্রতিকূল পরিস্থিতিতে লোভ, হিংসা ত্যাগ করে ভেতরের পশুত্বকে কোরবানি করারই উপযুক্ত সময় এটি।