ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ১০ম গ্রেড দাবিতে খাগড়াছড়িতে স্মারকলিপি প্রদান

স্টাফ রিপোর্টার,খাগড়াছড়ি :
ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জন্য ১০ম গ্রেডসহ পাঁচ দফা যৌক্তিক দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা সমিতি খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ , বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনোয়ার সাদাতের হাতে স্মারকলিপি টি তুলে দেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হাসান মারুফ।
এছাড়াও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াসী চাকমা, সদস্য তপন বিকাশ ত্রিপুরা, শেলী আক্তার, দীশকন চাকমাসহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বেতন–ভাতা নিয়ে দীর্ঘদিনের বৈষম্যের অভিযোগ-
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে-ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বেতনের ৭৫ শতাংশ সরকার এবং ২৫ শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদের অংশ থেকে প্রদান করা হয়। স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করের ১% এবং হাট–বাজার, জলমহালসহ বিভিন্ন উৎস থেকে ইজারাজনিত আয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সংগ্রহ করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়।
কিন্তু উৎসব ভাতা ও আনুতোষিক ভাতার ক্ষেত্রে এখনও ৫০% সরকার এবং ৫০% ইউপি অংশ থেকে প্রদান করার নিয়ম চলছে, যা কর্মকর্তাদের স্থায়ী বৈষম্যের মুখে ফেলেছে বলে উল্লেখ করা হয়। একই দায়িত্ব পালন করেও ভাতায় বৈষম্য-একে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অবমাননাকর এবং পেশাগত মনোবলকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে অভিমত জানান কর্মকর্তারা।
তারা আরও বলেন, দেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার ন্যায়সংগত উন্নয়ন এবং তৃণমূল প্রশাসনের সুষ্ঠু পরিচালনার স্বার্থে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ দীর্ঘদিন ধরে তারা কাঙ্ক্ষিত মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন।
স্মারকলিপিতে উত্থাপিত পাঁচ দফা দাবি:
১. ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ।
২. সময়োপযোগী নিয়োগবিধি প্রণয়ন ও পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি।
৩. মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে শতভাগ বেতন–ভাতা প্রদান।
৪. অবসর-পরবর্তী শতভাগ আনুতোষিক বা পারিবারিক পেনশন প্রদান।
৫. সেবাখাতকে শক্তিশালী করতে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর গঠন।
কর্মকর্তারা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় তারা তৃণমূলে অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, বিভিন্ন নাগরিক সেবা, স্থানীয় উন্নয়ন কার্যক্রম এবং সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে তারা সামনের সারিতে থাকেন।তবুও দীর্ঘ বছর ধরে তাদের দাবি-দাওয়া উপেক্ষিত হওয়ায় কর্মপরিবেশ ও পেশাগত মূল্যায়নে এক ধরনের হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
তারা বলেন-“বৈষম্য দূর করে সম্মানজনক গ্রেড, শতভাগ বেতন-ভাতা এবং অবসরকালীন পূর্ণ সুবিধা নিশ্চিত হলে তৃণমূলে সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে।” দ্রুত দাবিগুলো বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি দৃঢ় আহ্বান জানান ।




