Breakingখাগড়াছড়িপার্বত্য অঞ্চলসারাদেশ

খাগড়াছড়িতে বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা এসোসিয়েশনের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার ,খাগড়াছড়ি :
“প্রান্তিক খামারী এক হও এক হও” এই স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা এসোসিয়েশন খাগড়াছড়ি জেলা শাখা’র উদ্যোগে পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ,শনিবার দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা শহরস্থ চেঙ্গী স্কোয়ার ফোর পয়েন্ট রেস্টুরেন্টে এ পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

এ সময় বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা এসোসিয়েশন খাগড়াছড়ি জেলা শাখা’র সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম মল্লিক উপস্থিত ছিলেন।

 

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম মল্লিক বলেন, প্রান্তিক খামারীরা প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বাজারজাত করে থাকে ১৩৫ টাকায়,কিন্তু ব্যবসায়ীরা ১৯০থেকে ২২০টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। এতেখামারীরা প্রকৃতভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। এখানেই প্রচুর সিন্ডিকেট চলে, আমাদের কে  অবশ্যই এ সকল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে। আমাদের খামারীরা দেশের জন্য সবচেয়ে মূল্যবান যোদ্ধা।

এ সময় বক্তারা বলেন,স্বৈরাচারের আমলে প্রচুর সিন্ডিকেট ছিল।যেখানে প্রান্তুিক খামারীরা সঠিক মূল্য পাতো না, বাজার ব্যবসায়ীরা সেখানে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারণ ভোক্তা ও জনগনের মাঝে বেশি দামে বিক্রি করেছে। আমাদেরকে অবশ্যই এ সকল সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান ।

 

এ সময় বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা এসোসিয়েশনের মহাসচিব সাইদুর রহমান সাঈদী, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক খাগড়াছড়ি’র ম্যানেজার দেবাশীষ ত্রিপুরা, বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জোবেদা আক্তার,বাজার ব্যবসায়ী সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির পাটোয়ারী,সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহমুদুল হক সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

 

সভায় আগামী পহেলা জানুয়ারি থেকে” চার দফা দাবিতে সারা দেশে ব্রয়লার, লেয়ার, সোনালী সহ সকল প্রকার খামার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা দেয়া হয়।

দাবি সমূহ হল :
১. ব্রয়লার মুরগির খাদ্যের দাম ২ হাজার থেকে ২১শত টাকার মধ্যে আনতে হবে, এবং লেয়ার সোনালী মুরগীর খাদ্যের দাম ১৭ শত থেকে ১৮ শত টাকার মধ্যে আনতে হবে ও খাদ্যের গুণগতমান বৃদ্ধি করতে হবে।

২. ব্রয়লার লেয়ার সোনালী সহ সকল প্রকার মুরগির বাচ্চার দাম বাৎসরিক ভাবে ২০ থেকে ২৫
টাকার মধ্যে আনতে হবে।

৩. মুরগির খাদ্য ও বাচ্চা উৎপাদনকারী কর্পোরেট কোম্পানি, রেডি মুরগি ও ডিম উৎপাদন করা
বন্ধ করতে হবে।

৪. প্রতি উপজেলায় ৩০০ জন ব্রয়লার, লেয়ার, সোনালীসহ সকল প্রকার মুরগি পালনকারী খামারিকে কম পক্ষে ৩ লক্ষ টাকা সহজ শর্তে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ দিতে হবে। এই চার দফা দাবি যতক্ষণ বাস্তবায়ন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সারাদেশে সকল খামারি খামার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

 

এছাড়াও বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা সংগঠন এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমূহ ও খোলা চিঠির মাধ্যমে আরও ৮দফা দাবি জানানো হয়।

দাবি সমূহ হল :
১. ব্রয়লার, লেয়ার, সোনালী, ও মাছ গরুর খাদ্য সহ সকল প্রকার গৌ-খাদ্যের -অযৌক্তিক দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে, অনতি বিলম্বে কমাতে হবে এবং সকল প্রকার খাদ্যের মান বৃদ্ধি করতে হবে।

২.আমাদের কেন্দ্রীয় অফিসে আপনি একজন খামারি হিসেবে ঢাকায় আসলে থাকা ফ্রি নিজে রান্না করে খেতে পারবেন এই সুযোগ সুবিধা আমরা করেছি।

৩. ব্রয়লার, লেয়ার, সোনালী, সহ সকল প্রকার মুরগির বাচ্চার দাম কমাতে হবে এবং বাচ্চার মান বৃদ্ধি করতে হবে ২৫ টাকার মুরগির বাচ্চা ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।

৪.কর্মহীন বেকার তরুণ উদীয়মান যুবক সহ সকল শ্রেণীর বেকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যারা খাদ্য ও বাচ্চা উৎপাদন করে সেই কর্পোরেট কোম্পানিগুলো রেডি মুরগি ও ডিম উৎপাদন করতে পারবে না, তারা একেক জন কোম্পানির মালিক (১-থেকে-২ হাজার) বেকার মানুষের কর্মসংস্থান দখল করে আছে।

৫. দেশের মানুষকে প্রোটিন পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে দেশে বন্ধ হওয়া ৩০ লক্ষ প্রান্তিক খামারি দের সরকারি ঘোষনাকৃত, সহজ শর্তে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের আওতায় আনতে হবে সকল খামারি খামার চালু করার জন্য।

 

৬. জেলা উপজেলা পর্যায়ে ডিলাররা ৫০ টাকার বাচ্চা ৭০-৮০ টাকা রাখছে, বাচ্চার কার্টুনের গায়ে মূল্য নির্ধারণ নেই ডিলাররা বাচ্চা থেকে বেশি টাকা রাখে, খাদ্য থেকে বেশি টাকা রাখে, মেডিসিন থেকে বেশি টাকা রাখে, আবার সেই রেডি মুরগি বাজার মূল্য থেকে ১০ টাকা কমে ডিলারদের কাছে বিক্রি করতে হয় তা না হলে আপনি বিক্রি করতে পারবেন না, এইরকম বৈষম্য ও সিন্ডিকেট থেকে আমরা প্রান্তিক খামারিরা মুক্তি চাই।

 

৭. যে সকল খামারি ডিলার কিংবা কর্পোরেট কোম্পানির কাছে ব্ল্যাংক চেক দেওয়ার কারণে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা খেয়েছেন আমরা সকলেই মিলে সেই মামলার পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিহত করব নির্দোষ প্রমাণ করে আপনাকে মুক্ত করবো মামলা থেকে।

 

৮. পোল্ট্রি শিল্পের সমস্ত সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হলে প্রত্যেক জেলা উপজেলায় খামারিদের অধীনস্থ ডিলার নিয়োগ করতে হবে প্রত্যেক জেলা উপজেলা খামারিগণ এক স্থান থেকে খাদ্য বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে এবং রেডি মুরগি বিক্রি করার জন্য প্রত্যেক জেলা উপজেলায় একটি করে সরকার নির্ধারিত মুরগির আড়দ বসাতে হবে সেই লক্ষ্যে সকল খামারীদের আজকের পর থেকে একতা ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান। সারা বাংলাদেশের সকল খামারিদের বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা সংগঠন এর ছায়াতলে অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

 

প্রান্তিক খামারিরা বিভিন্ন দুর্যোগে, ত্রাণ সহযোগিতা প্রণোদনা, সরকারি ভ্যাকসিন, ঔষধ সহ সরকারি সমস্ত সুযোগ সুবিধা পেতে ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

Related Articles

Back to top button