পার্বত্য অঞ্চলরাঙ্গামাটিসারাদেশ

বেপরোয়া সিন্ডিকেটে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান উজাড়

কাগজ উৎপাদনে হুমকির মুখে

চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, কাপ্তাই , রাঙ্গামাটি :
কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের বন উজাড় থেমে নেই, রাত হলেই অন্তত অর্ধশত যানবাহনে করে কাঠ পাচার মহোৎসবে সক্রিয় হয়ে উঠে কাঠ প্রচার কারি সিন্ডিকেট । নরম কাঠের অভাবে কর্ণফুলী পেপার মিল কাগজ উৎপাদনে হুমকির মুখে ।

 

 

প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত চাঁদের গাড়ি জিপ ও বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে – পাল্পউডের মূল্যবান কাঠগুলো বাঙ্গালহালিয়া- – রাইখালী ও কোদালা সড়ক দিয়ে পাচার হয়ে যাচ্ছে।

 

কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের সৃজিত বনায়নের হাজার হাজার ঘনফুট পাল্পউড (নরম কাঠ) চোরাই পথে পাচারের কারণে পর্যাপ্ত কাঁচামালের অভাবে কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেড (কেপিএমে) উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে বলে মিলের ব্যবস্থাপনা সূত্রে জানা গেছে। বিনাবাধায় কাঠ পাচারের কারণে সরকার এ খাত থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।

 

অনুসন্ধানে জানা গেছে , বিসিআইসির অন্যতম প্রতিষ্ঠান চন্দ্রঘোনার কর্ণফুলী পেপার মিলে (কেপিএম) কাগজ উৎপাদনের প্রধান সহায়ক কাঁচামাল পাল্পউড (নরম কাঠ) যোগান দেয়ার লক্ষ্যে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের আওতায় আগে থেকে লাখ লাখ একর বনভূমিতে নরম কাঠের পাল্পউড বাগান সৃজন করা হতো।

 

স্বাধীনতার পর ধারাবাহিকভাবে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান থেকে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ‘পাল্প সরবরাহ করে কেপিএমে কাগজ উৎপাদন সচল রাখতে সক্ষম হয়। পরবর্তী সময় কারখানায় অনিয়ম, দূর্নীতি, গাফিলতি বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে ২০১৭ সাল থেকে নরম কাঠ পাল্পউড ও বাঁশ দিয়ে কাগজ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বিদেশি পাল্প ও ছেঁড়া কাগজ দিয়ে সীমিত আকারে কেপিএমে কাগজ উৎপাদন চলছিলো।

 

মিলের সাবেক পাল্পউড নরম কাঠ সরবরাহকারী এক ঠিকাদার বলেন, কেপিএমে পাল্পউড (নরম কাঠ) দিয়ে কাগজ উৎপাদন বন্ধ থাকার সুযোগে বনদস্যুরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীদের ম্যানেজ করে সৃজিত পাল্পউড বাগানে শতশত কাঠুরিয়া প্রবেশ করে কচি গাছ কেটে পাচার করে যাচ্ছে।

 

কেপিএম এলাকায় আবারো নতুন পেপার মিল প্রতিষ্ঠা করে বাঁশ ও পাল্পউড (নরম কাঠ) দিয়ে কাগজ উৎপাদন করার সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন রাইখালী সড়কে হাজার হাজার টন পারউড (নরম কাঠ) যে হারে পাচার হচ্ছে, অচিরেই পাল্পউড বাগান বিভাগের পুরো বনভূমি ন্যাড়া আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই সৃজিত পাল্পউড বনায়ন রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা। মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে শতভাগ কাঠ পাচার রোধ করা যাচ্ছে না বলে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন।

Related Articles

Back to top button