খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ কর্তৃক হারানো মোবাইল উদ্ধার ও মালিকদের মাঝে হস্তান্তর
স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি :
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা ছিনতাই হওয়া মোবাইল, হারানো মোবাইল ও চোরাই মোবাইল উদ্ধারে চট্টগ্রাম রেঞ্জের প্রতিটি ইউনিটকে জোর নির্দেশনা প্রদান করেছেন। ডিআইজি’র প্রদত্ত নির্দেশনাকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপার মুুক্তা ধর এর প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে খাগড়াছড়ি জেলার ০৯ (নয়) টি থানা থেকে মোবাইল ফোন সংক্রান্ত জিডি ও অভিযোগগুলি সংগ্রহ করে খাগড়াছড়ি সাইবার ইনটেলিজেন্স এন্ড ইনভেস্টিগেশন ইউনিট তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ ও ব্যবহার করে মাত্র ০৭ (সাত) দিনের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন মডেলের ৩৩ (তেত্রিশ) টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন।
উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনগুলি প্রকৃত মালিকদের নিকট ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪ রবিবার বিকালে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার মুক্তা ধর হস্তান্তর করেন।
হারানো মোবাইল ফোনগুলি হাতে পেয়ে খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন থানা থেকে আগত মোবাইল মালিকগণ আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তাদের মধ্য থেকে পানছড়ি থানা থেকে আগত মোঃ হালিম (২৫) বলেন, আমি পেশায় একজন শ্রমিক। আমি পানছড়ি সিমান্তগামী মহাসড়কে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করছি। গত ০২ (দুই) মাস পূর্বে আমার মোবাইল ফোনটি চুরি হয়ে যায়। আমি অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে মোবাইল ফোনটি কিনে ছিলাম। শখের মোবাইল ফোনটি হারিয়ে আমি মনে প্রচন্ড কষ্ট পাই। কোন উপায় না পেয়ে আমি পানছড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করি। আমি ভেবেছিলাম হারানো মোবাইল ফোনটি আর কখনোই ফিরে পাবো না। আজ যখন খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার আমার হাতে আমার হারানো মোবাইলটি তুলে দিলেন তখন আমার কাছে স্বপ্ন মনে হচ্ছিল। আমি পুলিশ সুপারের দীর্ঘায়ু কামনা করি এবং বাংলাদেশ পুলিশ কে ধন্যবাদ জানাই।
একই ভাবে খাগড়াছড়ি জেলার দূর্গম এলাকা তাইন্দং থেকে আগত জনৈক আব্দুল সবুর (৫৫) তার মেয়ের হারানো মোবাইল ফোনটি পুলিশ সুপার মহোদয়ের হাত থেকে গ্রহণ করে কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন যে,আমি একজন দিনমজুর। আমার মেয়ে কলেজে পড়াশোনা করে। কলেজের পড়াশোনার কাজের জন্য আমার মেয়েকে আমি কষ্ট করে ধারদেনা করে একটি টাচ্ মোবাইল কিনে দেই। বাড়ীতে চার্জ দেওয়ার সময় আমার মেয়ের মোবাইল ফোনটি চুরি হয়ে যায়। আমার মেয়ে মোবাইল ফোনটি হারিয়ে প্রচন্ড কান্নাকাটি করে। আমি আল্লাহর নিকট বিচার দেই। আজ আল্লাহ আমার ডাক শুনেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপারের মত যদি স্যার থাকতো তাহলে আমার মত গরিব দুঃখি মানুষের অনেক উপকার হতো।
এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধারের আমাদের এই কার্যক্রম ও তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। আমি ইতোমধ্যে খাগড়াছড়ি জেলার প্রতিটি থানা ও ইউনিটকে এই বিষয়ে জোর তাগিদ প্রদান করেছি। খাগড়াছড়ি জেলাবাসীদের প্রতি আমার আহবান থাকবে আপনাদের শখের মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে আপনারা সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করবেন। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করব আপনাদের শখের মোবাইলটি আপনাদের নিকট ফিরিয়ে দেওয়ার। আমরা আপনাদের পাশে আছি এবং পাশে থাকব। আমাদের খাগড়াছড়ি সাইবার ইনটেলিজেন্স এন্ড ইনভেস্টিগেশন ইউনিট আপনাদের সার্বক্ষণিক সকল প্রকার সাইবার সংক্রান্ত সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে বলে আশ্বাস দেন।