Breakingপার্বত্য অঞ্চলবান্দরবানসারাদেশ

সেনা বাহিনীর মানবিক সহায়তা পেল ২৫টি বম পুর্নবাসিত পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার, থানচি ,বান্দরবান :
বান্দরবানের থানচি ও রুমা দুই উপজেলার সীমান্তে বসবাসরত এবং পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকিচিং ন্যাশনাল ফ্রন্ট (KNF) এর আতংঙ্কের ভয়ে ভারতে মিজোরামে পালিয়ে যাওয়ার সেনা সহায়তা ফেরত আসার ও পুর্নবাসিত ৪ গ্রামের (বাকলাই, প্রাতা, থান্দই ও সিমত্লাংপি পাড়া) ২৫ পরিবারের হাতে সেনা বাহিনীর মানবিক সহায়তা তুলে দেয়া হয়েছে।

 

 

১৮ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার সকালের রুমা উপজেলা সীমান্তে বাকলাই বম পাড়া প্রাঙ্গনে এ সহায়তা বম পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়।

 

সেনাবাহিনী কর্তৃক মানবিক সহায়তার পাশাপাশি বিনা মূল্যের ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।

 

বম জনগোষ্ঠিরা জানান,২০২১-২২ সালে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকিচিং ন্যাশনাল ফ্রন্ট (KNF) সদস্যরা সমতলের জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল খবর পেয়ে সেনা বাহিনীর অভিযান চালায়। সে সময় প্রায় ১৩ টি গ্রাম থেকে আতংঙ্কে ভারতে মিজোরাম ও দেশের বিভিন্ন জায়গা সাধারণ বম জনগোষ্ঠি প্রায় ৪৪৬ পরিবারের ৩ হাজার লোক পালিয়ে যায়। ২০২৩ সালে সেনা সহায়তা দেড় শতাধিক পরিবার ফিরে আসেন।

 

পরবর্তিতে ২০২৪ সালে থানচি ও রুমা উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (KNF) ভর দুপুরের ডাকাতি করে। এ সময় সন্ত্রাসী সংগঠনের অস্ত্রধারী সদস্যরা অসহায় বম পরিবার গুলিকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। তাদের আতংঙ্কের থানচি রুমা দুই উপজেলা সীমান্তে বসবাসরত ফের দেড় শতাধিক পরিবার পালিয়ে যায়। ২০২৫ সালে এপ্রিল মাস পর্যন্ত পাহাড়ে অভ্যন্তর হতে ৭৭ পরিবার এবং ভারতে মিজোরাম হতে ২৫ পরিবার ফিরে আসে। যার ফলে মোট ১০২ পরিবার বর্তমানে নিজ পারায় বসবাস করছে। ভারতে মিজোরাম হতে নতুন ফিরে আসা ২৫ পরিবারকে পুর্নবাসন করে দিয়েছে সেনাবাহিনী।

 

পারকেল বম জানান, মোট ১০২ পরিবার ফিরে এসেও সঠিক সময় জুম চাষ করতে না পারায় দিন মজুরী করার সুযোগ না থাকায় সকলেরই মানবেতর জীবন পার করছে।

 

বিষয়টি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নজরে আসলে গত কয়েক মাসে ৭৭ পরিবারকে সহায়তা দিয়েছিল।এরই ধারাবাহিকতায় আজ আরও ২৫ পরিবারকে সহায়তা দিয়েছে।

 

শান্তি,সম্প্রীতি ও উন্নয়ন শ্লোগানের সেনাবাহিনী কর্তৃক মানবিক সহায়তা প্রদান কর্মসূচী বান্দরবান রিজিয়ন এর পরিচালনায় ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর আওতায় বাকলাই পাড়া সেনা সাবজোন ক্যাম্প অধিনায়ক এ কর্মসূচীর নেতৃত্ব দিয়েছেন।

 

বাকলাই গ্রামে পাড়ার প্রধান থংলিয়ান বম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা গতবছর এপ্রিল-মে মাসের দিকে গ্রামে ফিরেছি। কিন্তু সঠিক সময়ের জুম কাটতে না পারায় অনেক কষ্টের দিন পার করেছিলাম। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের জন্য অনেক কিছু দিয়েছে এবং পালিয়ে যাওয়ার মানুষগুলো ও ফিরে আনতে চেষ্টায় চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেনাবাহিনীর কাছে অনেক কৃতজ্ঞ।

 

অধিনায়ক, ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট জানান, পাহাড়ে জন নিরাপত্তা, আত্মসামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা সহ শান্তির পরিবেশ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শান্তি, সম্প্রীতি এবং উন্নয়নের এ ধারা বজায় রাখার জন্য আমাদের এ নিরলস প্রচেষ্টা সব সময় অব্যাহত থাকবে। বাকলাই পাড়া সাব জোনের অর্ন্তগত সকল পাড়া ও সকল সম্প্রদায়ের জনগণের নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব ও কর্তব্য।

Related Articles

Back to top button