Breakingখাগড়াছড়িপার্বত্য অঞ্চলসারাদেশ

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার ,খাগড়াছড়ি :
খাগড়াছড়ির রামগড় থানার পাতাছড়া ইউনিয়নের রাজারঘাট গ্রামে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক ও কঠোর শাস্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ ও ভুক্তভোগী পরিবার।

 

২৬আগস্ট ২০২৪, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মলেনে লিখিত বক্তব্যের জানান,গত ২২আগস্ট রাত আনুমানিক ১১টার দিকে রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের রাজার ঘাট গ্রামে এক পাহাড়ি বিধবা গৃহবধূর বাড়িতে ৬-৭ জনের একটি দল ভিকটিমের বাড়ীতে হানা দেয়। পরে মা ও মেয়েকে ধরে স্থানীয় জনৈক এর কলাবাগানে নিয়ে যায়। মেয়ে কোনমতে ধর্ষকদের হাত থেকে পালিয়ে যেতে পারলেও মা(ভিক্টিম)-কে পালাক্রমে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। পরে মেয়ে গ্রামবাসীকে খবর দেয়। গ্রামবাসীরা আসার সংকেত পেয়ে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ রামগড় শাখা’র সভাপতি গুলোমনি চাকমা জানান,ভিকটিম ধর্ষকদের মধ্যে ৩ জনকে চিনতে পেরেছেন। ধর্ষকরা রামগড় উপজেলার নাকাপা থেকে ১-মো. ইউসুফ,২-মো. রানা, ৩-মো. ফয়সাল। বাকী ৪ জনের নাম এখনো অজ্ঞাত। উক্ত ঘটনার পর ভিকটিম পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং এলাকায় জনমনে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে রামগড় থানার অফিসার্স ইনচার্জ দেব প্রিয় দাশ জানান, গতকাল ২৫ আগস্ট থানায় মামলা হয়েছে। ভিকটিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ধর্ষকদের গ্রেফতারের জন্য তৎপর চালাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ধর্ষণ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে দাবি সমূহ:
১. অবিলম্বে ধর্ষক ও তাদের সহযোগিদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে।
২.গ্রামের মুরুব্বী ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ভিকটিম ও তার মেয়ের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩.ভবিষ্যতে যাতে কোন নারী ধর্ষণ সহ যৌন সহিংসতার শিকার না হয় তার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৪. ইতিপূর্বে সংঘটিত সকল ধর্ষণ ঘটনার বিচার এবং দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
৫.পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণ সহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত ও বিচারের জন্য জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সংগঠনকে যুক্ত করতে হবে।

 

লিখিত বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ রামগড় শাখা’র সভাপতি গুলোমনি চাকমা আরও বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি নারীদের ওপর ধর্ষণ ও যৌন হামলার ঘটনা নতুন নয়। মূলতঃ বিগত শতকের ৮০-এর দশক থেকে পার্বত্য এলাকায় পাহাড়ি নারীরা ধর্ষণ সহ যৌন সহিংসতার শিকার হয়ে আসছে। এ সময় অসংখ্য পাহাড়ি নারী ও শিশু ধর্ষণ, গণ ধর্ষণ ও ধর্ষণ প্রচেষ্টার শিকার হয়েছে। এমনকি অনেককে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। কিন্তু দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া আজ পর্যন্ত অপরাধীদের শাস্তি হয়নি। চিহ্নিত অপহরণকারী ও ধর্ষকদের সাজা হয় না বলেই এ ধরনের যৌন হামলার ঘটনা বার বার ঘটে চলেছে। অচিরেই এই বিচারহীনতা ও জবাবদিহি হীনতার অবসান হওয়া উচিত। আমরা আশাকরি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে এ বিষয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে।

Related Articles

Back to top button