ভাঙনের মুখে লোগাং অনুপম হিমাংশু ক্রীড়াঙ্গন মাঠ ; সংস্কার জরুরী

স্টাফ রিপোর্টার ,খাগড়াছড়ি:
পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের বাবুরাপাড়ায় খেলাধুলার স্থান অনুপম হিমাংশু ক্রিড়াঙ্গন” মাঠ। অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢলে মাঠের অনেকাংশে ভাঙনের ফলে মাঠটি খেলাধুলার অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। সংস্কারের দাবী স্থানীয় ক্রীড়া প্রেমী জনগণ, তরুণ খেলোয়াড় ও শিশু-কিশোররদের।
২০১৯-২০২০ ইং সালে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান প্রত্যুত্তর চাকমা সরকারের পলিসির সাথে সমন্বয় রেখে এলাকার যুব সমাজকে মাদকাসক্তি, মোবাইল আসক্ত থেকে ফিরিয়ে এনে ক্রীড়া মূখী করা এবং খেলা ধুলায় অত্রাঞ্চলের অগ্রগতি সাধন করার জন্য এই মাঠ তৈরি করেন। মাঠ তৈরির সাথে সাথেই লোগাং ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে শীতকালীন ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২০ উৎযাপন, সর্বপ্রথম নারী ফুটবল ম্যাচ আয়োজন, বৈসাবি উৎসবে ঐতিহ্য বাহি বলি খেলা সহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতিটি খেলা ও অনুষ্ঠান উপভোগ করতে হাজারো লোকের সমাগম হত।
এছাড়াও মাঠটিতে স্থানীয় তরুণরা প্রতিদিন ফুটবল, ক্রিকেট ভলিবল সহ বিভিন্ন ক্রীড়ায় অংশগ্রহণ করে থাকে। পার্শ্ববর্তী লোগাং উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে এলাকার নানা সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য স্থানীয়রা অনুপম হিমাংশু ক্রিড়াঙ্গন মাঠ ব্যবহার করে থাকে। বৃষ্টির পানি বের হওয়ার ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পাহাড়ি ঢলে মাঠের একাংশ ভেঙে পরায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পৌঁছে গেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ভাঙন শুরু হওয়ার পর একাধিকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হলেও, এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সময় মতো সুরক্ষা দেয়াল নির্মাণ বা ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করলে হয়তো আজ মাঠটি রক্ষা করা যেত।
স্থানীয় খেলোয়াড় জুলেন চাকমা, সর্বোত্তম চাকমা, রেবিক চাকমা, কলিন চাকমা, সুমন চাকমার সাথে কথা বললে জানায় -“আমরা যারা নিয়মিত খেলতাম, এখন মাঠে নামতেও ভয় লাগে। প্রতিদিন একটু একটু করে মাটি সরে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে পুরো মাঠ ধসে গেলে এই অঞ্চলে আর খেলাধুলা করার কোনো জায়গাই থাকবে না।”
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রত্যুত্তর চাকমা বলেন, খেলাধুলা শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি শিশু- কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের অন্যতম প্রধান উপাদান। অথচ সেই পথ এখন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এই ভাঙনের কারণে।
স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, মাঠ না থাকায় তাদের সন্তানেরা ঘরে বসে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা সুস্থ জীবনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
চেঙ্গী ইউপি চেয়ারম্যান আনন্দ জয় চাকমা বলেন, লোগাং বাবুরা পাড়ার সকল ক্রীড়াপ্রেমী, খেলোয়াড়, অভিভাবক ও সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং পানছড়ি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি “ অনুগ্রহ করে দ্রুত পদক্ষেপ নিন। মাঠ রক্ষা করুন। প্রয়োজনে অস্থায়ী ভাবে বাঁধ বা প্রতিরক্ষা দেয়াল তৈরি করুন, যাতে মাঠটির আর ক্ষতি না হয়।
এ বিষয়ে লোগাং ইউপি চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা বলেন, লোগাং বাবুরা পাড়ার ক্রীড়াপ্রেমী, খেলোয়াড়, অভিভাবক গন মাঠ ভাঙ্গনের বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমি বিষয়টি মৌখিক ভাবে উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। খুব তাড়াতাড়ি এর সমাধান না হলে মাঠটি রক্ষা করা যাবে না।