বিপুল -সুনীল-লিটন-রুহিনদের স্মরণে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত
হত্যাকান্ডের ১ বছর পুর্তি
স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি :
পার্বত্য খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় গনতান্ত্রিক যুব ফোরাম,বৃহত্তর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ কর্তৃক শহিদ বিপুল -সুনীল-লিটন-রুহিনদের স্মরণে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১১ ডিসেম্বর ২০২৪ বুধবার পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদিকা পরিমিতা চাকমার সভাপতিত্বে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্মরণ সভার শুরুতে ইউপিডিএফ ,শহিদ পরিবার বর্গ,গনতান্ত্রিক যুব ফোরাম,বৃহত্তর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ছাত্র-ছাত্রীরা শহিদদের প্রতিকীতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন। পরে সকল শহিদদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
স্মরণ সভায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পরান্তু চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন , ইউপিডিএফের উপজেলা সমন্বয়ক আইচ্যুক ত্রিপুরা, ছাত্র-জনতা সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র চাকমা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অসেতু বিকাশ চাকমা, পানছড়ি উপজেলা পিসিপি-র সভাপতি সুনীল ময় চাকমা প্রমুখ।
” শহীদের রক্তস্নানে জেগে ওঠো বীরের বেশে, যুক্ত হও পূর্নস্বায়ত্ব শাসনের লড়াইয়ে ” স্লোগানে বক্তারা বলেন,শহিদ বিপুল -সুনীল-লিটন-রুহিনদের হত্যাকান্ডের ১ বছরেও খুনিদের কাউকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। এই খুনিরা এখনো প্রশাসনের ছত্রছায়ায় খুন, অপহরণ সহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি গত ৩০ অক্টোবর ঐ সন্ত্রাসীরা পানছড়িতে আবারো একই ভাবে গুলি করে তিন ইউপিডিএফ সদস্যকে হত্যা করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বসবাসরত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতি সত্তাদের নিয়ে পুর্ণস্বায়ত্ত শাসন অধিকারকামী সংগঠন ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনে গুলোর প্রতি শাসক গোষ্ঠী ও এক শ্রেণির স্বার্থম্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের কোন শেষ নেই। জেএসএসের এক মুখ পাত্র করুণালঙ্কার ভান্তে ভারতে বসে নিয়মিত অপপ্রচার করেই চলেছে। একজন সৎ চরিত্রবান ভিক্ষু একটি আদর্শবান রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র এ ধরনের মিথ্যাচারণ যা একটি একটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক দলের চরম মূর্খতা।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে হাসিনার আমলে সৃষ্ট ঠ্যাঙাড়ে নব্য মুখোশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রশাসন উক্ত সন্ত্রাসীদের এখনো আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। সেই সুযোগে নব্য মুখোশরা খুন-খারাবি সহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী ও শহিদ পরিবারবর্গ অবিলম্বে বিপুল সহ চার খুনে জড়িত ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ সন্ত্রাসী ও মদতদাতাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং খুনি নব্যমুখোশ বাহিনীকে ভেঙে দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ রাতে সন্ত্রাসীরা পানছড়ির লোগাং এলাকায় একটি বাড়িতে সশস্ত্র আক্রমণ করে পিসিপির সাবেক সভাপতি ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি সুনীল ত্রিপুরা, ইউপিডিএফ সংগঠক রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা (রহিনসা) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা সহ সভাপতি লিটন চাকমাকে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ নিয়ে নিহতদের পরিবারবর্গ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।