চেঙ্গী দর্পন প্রতিববেদক : ‘বাজান আমনেরা পারলে আমার লাইগ্গা কিছু করোইন যে, আমি গরীব মানুষ, মাইনসের বাড়িত বাউয়াইল্লা থাহি! অসুস্থ বুড়া স্বামীর চিকিৎসার টেহা আর আর দুইল্লা খাওনের লাইগ্গা বাজান ভিক্ষা করি, বাবারে এই বুড়া বয়সো কি ভিক্ষা করনের মনেলো’ বয়সের ভারে লম্বা দীর্ঘদেহী এই নারী বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে এভাবেই মনের কথাগুলো বলছিলেন ৮০ বছর বয়সী জরিনা খাতুন। বয়সের ওজনে ভিক্ষা করার শক্তি নেই। ঠিক মতো হাটা চলাও করতে পারেন না । তারপরও অসুস্থ বৃদ্ধ স্বামীর চিকিৎসার টাকা আর এক মুঠো ভাতের জন্য ছুটে চলতে হয় বাজার থেকে গ্রামে। বয়সের ভারে জরিনা খাতুনের মৃত্যু যখন কড়া নাড়ছে দরজায়, তখন নিত্য যুদ্ধ স্বামীর চিকিৎসার টাকা আর পেটের খোরাক জোগাড় করার।
তবে কোন কোন দিন না খেয়েও দিন পার করেন এই বৃদ্ধ মহিলা। জরিনা খাতুনের বাড়ি ধোবাউড়া উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের চাড়িয়াকান্দা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের চান্দু মিয়ার স্ত্রী। রয়েছে একমাত্র ছেলে জালাল মিয়া। জালাল মিয়াও গ্রামে গ্রামে ঘুরে কটকডি বিক্রি করে তার ৪সন্তানসহ স্ত্রীর জীবিকা নির্বাহ করেন। গর্ভধারিণী বৃদ্ধ মা জরিনা খাতুন যেন আজ বাবাকে নিয়ে বোঝার মতো ভালোবাসায় ঘেরা অভাবের সংসারে। ছেলে সংসার ঠিকমতো না চলার কারণে তিনি এই বৃদ্ধ বয়সে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে বেড়ান।
জরিনা খাতুন বয়সের কারণে ঠিকমতো আজ কথাও বলতে পারেন না। লম্বা দীর্ঘদেহী এই নারী বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে জানান, উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি বয়স্ক ভাতা কার্ড করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু এদিয়ে বৃদ্ধ অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসা খরচ’ই চলে না ভিক্ষা না করলে খাবো কোথা থেকে। অন্যের জমিতে ছোট্ট একটি ঘর নির্মান করে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করেই বৃদ্ধ অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসা করানোসহ জীবীকা নির্বাহ করে এই অসহায় বৃদ্ধ জরিনা খাতুন।