চট্টগ্রাম অঞ্চলসারাদেশ

ফটিকছড়িতে সড়ক উন্নয়নেের কাজে ব্যবহার হচ্ছে হালদা চরের মাটি

চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, ফটিকছড়ি চট্টগ্রাম  :
ফটিকছড়িতে সড়ক উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে হালদা চরের মাটি। উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের একখুলিয়া এলাকায় সড়ক সংস্কারে হালদা চরের মাটি ব্যবহারে করার অভিযোগ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মহসিন এন্ড ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে।

 

২২ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার,বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর একখুলিয়া অংশে জেগে ওঠা চরের মাটি এস্কেভেটর দিয়ে কেটে ড্রাম ট্রাকে করে পাশ্ববর্তী সড়ক উন্নয়ন কাজে ফেলা হচ্ছে।

 

মৎস্য হেরিটেজ ঘোষিত হালদা নদী থেকে মাটি- বালি উত্তোলন আইনত দন্ডনীয় অপরাধ হলেও এসবের তোয়াক্কা করছেনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে, নদীর চর থেকে নির্বিচারে মাটি উত্তোলনের কারনে হুমকির মূখে পড়েছে দক্ষিন এশিয়ার একমাত্র মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা । নদী চরেরএ অংশ থেকে মাটি উত্তোলন কার্যক্রম এক সপ্তাহের বেশী সময় ধরে চললেও প্রশাসনের তৎপরতা দেখা যায়নি।

 

 

এ সময় সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে কিছু শ্রমিক পালিয়ে গেলেও এস্কেভেটরের চালক জানান সরকারী রাস্তার উন্নয়ন কাজের প্রয়োজনে ঠিকাদারের নির্দেশনায় এসব মাটি কাটা হচ্ছে। তবে কর্তনকৃত মাটি রাস্তার কাজে ব্যবহারের কথা বলা হলেও কিছু মাটি বাইরে পাচার করার অভিযোগ স্থানীয়দের।

 

অন্যদিকে, ওই এলাকায় বেড়িবাঁধের বড় একটি অংশ কেটে মাটি পরিবহন করার কারণে ফের ভাঙ্গনের মূখে নিপতিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে হালদা।

 

সড়কটি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়,এক কিলোমিটার অংশ এইচ বিবি দ্বারা সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাইরে থেকে ইট ও আনুষঙ্গিক সামগ্রী সংগ্রহ করলেও বালি মিশ্রিত মাটি নিচ্ছে পাশ্ববর্তী হালদা নদী থেকে।।

 

এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানর স্বত্তাধিকারী মহসিন হায়দারের বক্তব্য জানতে চেয়ে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে কাজ তদারকির পরিচয় দিয়ে মারুফ হাসান নামে একজন সড়কটির উন্নয়ন কাজে হালদার মাটি ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন।

 

স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দিন সুমন বলেন, তখন সড়কের উন্নয়ন চিন্তা মাথায় ঘুরছিল। তাই হালদা থেকে মাটি উত্তোলন নিয়ে ভাবিনি।

 

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কোঅর্ডিনেটর ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার হালদা থেকে বালু উত্তোলন-মাটি কাটা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। যারা মাটি কেটে নদীর জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে ফেলছে তাদেরকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা দরকার।

 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন কাজ বাস্তবায়ন করা ঠিকাদারের কাজ। মাটি বালি সংগহের ব্যাপারে আমরা অবগত নই।

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন কোন অবস্থাতেই হালদা নদী থেকে মাটি – বালি উত্তোলন করা যাবেনা। ওই এলাকায় এক্ষুনি অভিযান চালিয়ে এস্কেভেটরটি জব্দ করতে এসিল্যান্ডকে বলে দিচ্ছি।

 

রাত ৮টার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে এস্কেভেটরটি জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

Related Articles

Back to top button