পাইকারী -খুচরা ব্যাপারীর দোষারোপের মধ্যে ক্রেতার পকেট খালি
বাজার গরম...অসহায় ক্রেতা সাধারণ
চট্টগ্রাম :
“ আয় বাড়েনি চাকরী জীবিদের কিন্তু বাজারে গিয়ে দিশেহারা। চাকরি জীবীদের বেতন-ভাতাও বাড়েনি কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পন্যের দাম প্রতিনিয়ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বাজার নিয়ন্ত্রনে কার্যকর কোন মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় যে যার খুশি মতো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। দাম বাড়লেও জেলে- কৃষক দাম পায় নি । সুবিধা লুটছে সিন্ডিকেট দারিরা… ”
সবজির বাজার থেকে শুরু করে মাছের বাজার, মশলার বাজার সব কিছুতেই যেনো আগুন লেগেছে। কাঁচা মরিচ বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। বিক্রেতাও তাই এখন কেজির দাম না বলে ক্রেতাকে আড়াইশো গ্রাম বা ১০০ গ্রামের দাম বলছে যাতে ক্রেতা ভয় পেয়ে ছুটে না যায়। ভোক্তা অধিকার, জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত মাঝে মধ্যে কয়েকটি বাজারে অভিযান চালালেও সেখানে আদালতের টীমের লোকজন চলে আসার পর দাম আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়।
৬ অক্টোবর ২০২৩, শুক্রবার নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেলো সাধারন ক্রেতারা যে টাকা নিয়ে বাজারে যাচ্ছে তা দিয়ে তার প্রয়োজনীয় জিনিষ না কিনেই ফিরে আসতে হচ্ছে। এর মধ্যে টিসিবি চাল, ডাল, সয়াবিন তেল ও চিনি সহ ভোগ্যপণ্য বিক্রি করার কথা থাকলেও চট্টগ্রাম নগরীতে এখন পর্যন্ত তা দেখা যায়নি। এক কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ থেকে চারশ টাকায়, একই ওজনের মৃগেল ও কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে সাড়ে তিনশ টাকায়। ডিমের দামও কমেনি , ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। সামুদ্রিক মাছের বাজারও চড়া। এমনকি লইট্টা মাছও বিক্রি হচ্ছে বাজার ভেদে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। পোয়া মাছ সাড়ে তিনশ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। এমন কি মাঝারি সাইজের তেলাপিয়া মাছ ২০০ টাকা কেজির নীচে পাওয়া যাচ্ছেনা। এবার বাংলাদেশীদের ভাগ্যে ইলিশ মাছের স্বাদ নেওয়া বোধ হয় কপালে নেই। এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৩০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকার নীচে পাওয়া যাচ্ছে না। পাঙ্গাস মাছও বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় । ব্রয়লার মুরগী বাজার ও সাইজ ভেদে প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি। খাসির মাংস ১১০০ টাকার নীচে নেই কোথাও। তার মানে বাঙ্গালির আমিষ গ্রহন কমানো ছাড়া কোন উপায় নেই।
সবজির বাজারেও আগুন। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। কাকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। বেগুনও আশি টাকার নীচে পাওয়া যাচ্ছেনা। যে আলু নিয়ে এতসব কান্ড চলছে তার দামও ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি । পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, এর দাম আরো বাড়বে বলেই তাদেরকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন। আদা বিক্রি হচ্ছে আড়াইশো টাকায়। রসুন ১৮০ টাকা কেজি। চাল-ডাল-তেল-মরিচ-হলুদ যাই কিনতে যান না কেন বাড়তি দাম দিতেই হবে ক্রেতাকে। সবজির বাজারের দাম বাড়ার জন্য বিক্রেতারা বৃষ্টিকে দায়ী করছেন। কিন্তু বাজারে সবজি সহ অন্যান্য ভোগণ্য যে কম আছে তা নয়, দাম বেশি। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন- পাইকারিতে দাম বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে, আর পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন- তাদেরকে আড়তে থেকে যে দামে বিক্রি করতে বলা হয় তারা সেই দামের কমে বিক্রি করতে পারেননা। এই পরস্পরের দোষারোপের মধ্যে ক্রেতার পকেট খালি হচ্ছে।