নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে গুলাগুলির আওয়াজ ; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার
স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান :
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তুমব্রু এলাকার ওপারে ফের প্রচন্ড গুলাগুলির শব্দের খবর পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তুমব্রুর ওপারের মিয়ানমার অভ্যন্তরে তাদের বিদ্রোহি গোষ্টি আরাকান আর্মি (এএ) এর সাথে সেই দেশের সেনাবাহিনী-বিজিপির যৌথ ভাবে ঘটনাটি ঘটেছে। এতে রক্তে রঞ্জিত হয়েছে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চল।
সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় সেখানের সীমান্ত সড়কে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। সীমান্তের এলাকাবাসীরা মনে করেন এসব ঘটনা ঘটতে থাকলে আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। এই আশঙ্কাকে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবিও তাদের তৎপরতার ইতোপূর্বেকার চেয়ে বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে।
সীমান্তের ওপারের সূত্রগুলো জানিয়েছে, মিয়ানমার সরকারের সীমান্তরক্ষী, সেনাবাহিনীর,পুলিশ ও দুর্বৃত্তদের অমানবিক আচরণের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে কেউ কেউ ধারণা করছেন এই ঘটনার সূত্র ধরে ফের ওই দেশে নতুন ভাবে রোহিঙ্গা বিরোধী রক্তাক্ত অভিযান হতে পারে।
৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার ভোরে সীমান্তের ওপারে গুলির শব্দ শোনা যায়। তুমব্রু বাজারের বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তে এসব গুলির শব্দ হচ্ছে। এছাড়া রেজু সীমান্তের কাছে হেলিকপ্টার টহল দিতে দেখা গেছে। সকাল থেকে সীমান্তের আওয়াজ শোনার পর সীমান্তের নো মেন্স ল্যান্ডের কাছাকাছি বসবাসরত রোহিঙ্গারা ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা গিয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘুমধুমের তুমব্রু,বাইশফাঁড়ি,ফাত্রাঝিরি,রেজু,আমতলী সহ বিভিন্ন এলাকা এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের গুলিবর্ষণ ও ভারি অস্ত্রের ব্যবহার অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রকৌশল ব্যাটালিয়ন ২০ ইসিবির অধিনায়ক লে: কর্ণেল সৈয়দ রিয়াসত আজিম জানিয়েছেন সীমান্ত উত্তেজনার কারনে গত ১৫ দিন যাবৎ সীমান্ত সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সড়কটির নির্মাণ কাজ পূনরায় চালু হবে ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস জানিয়েছেন সীমান্তে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্তক অবস্থায় জোরদার করা হয়েছে।স্থানীয় লোকজনদেরকে সীমান্ত এলাকায় যেতে পুলিশের পক্ষে থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি।
নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বরাবর সীমান্তের মিয়ানমার অভ্যান্তরে অজস্র গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরতরা। নিরাপত্তার কারনে সীমান্তের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বিপাকে পড়েছে। সীমান্ত এলাকার পাহাড় গুলো থেকে গাছ, বাঁশ, লাকড়ি সংগ্রহকারী দিন মজুরেরা এখন সেখানে যেতে পারছেনা।
বিভিন্ন ভাবে আতঙ্কিত রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে বলে একটি সূত্র জানায়। কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বিজিবি সদস্যরা তৎপরতা আরও জোরদার করায় রোহিঙ্গাদের পক্ষে সহজে অনুপ্রবেশ সম্ভব হয়ে উঠছে না। গুলা গুলির আওয়াজের ভয়ে কিছু কিছু রোহিঙ্গা পরিবার বাঁচার তাগিদে তারা পাহাড়ের গহীন অরণ্যে আশ্রয় নিয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গুলির শব্দ ছাড়া বাংলাদেশে গুলি ছুড়ে আসিনি এবং কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।