Breakingপার্বত্য অঞ্চলবান্দরবানসারাদেশ

জলপ্রপাতের গহীনতা থেকে পর্যটককের মৃতদেহ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান:
বান্দরবানের থানচি উপজেলা ঙাঁফাখুম জল প্রপাতের গোসলে নেমে নিখোঁজ পর্যটক মোঃ ইকবাল হোসেন (২৪)কে ৭২ ঘণ্টা পর মরদেহ উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী দল।

 

 

১৬ নভেম্বর ২০২৫,রবিবার সন্ধ্যায় ফায়ার ডিফেন্স চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের ডুবুরী দলের প্রধান রহিদুল ইসলাম জলপ্রপাতের পানির নিচে গভীর গুহা ভিতরের আটকানো মৃত দেহ উদ্ধার করে।

 

 

গত শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে গোসলে নেমে পর্যটক মোঃ ইকবাল হোসেন ঙাঁফাখুমের ভিতরে আটকে গিয়ে নিখোঁজ হন। পুলিশ,ফায়ার ডিফেন্স,বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় পর্যটক পথ প্রদর্শক ও বোট মাঝিদের সহযোগীতা শনিবার সকাল থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দীর্ঘ ৭২ ঘন্টা উদ্ধার অভিযানের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

 

 

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত শুক্রবার ঢাকা থেকে ১৭ জনের একটি পর্যটক টিম আলীকদম হয়ে তিন্দু গ্রোপিং পাড়া এবং সেখান থেকে পর্যটক পথ প্রদর্শক ছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদিত রেজিস্টার ( নিবন্ধন ছাড়া ) ঙাঁফাখুম জলপ্রপাতে ভ্রমনের যান। সেখানে স্থানীয় একটি রিসোর্টে অবস্থান করে ঙাঁফাখুম জল প্রপাতে গোসলে নামলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

 

 

উদ্ধার অভিযানের অংশ নিয়ে অভিজ্ঞতা কথা থানচি ফায়ার ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা তরুন বড়ুয়া বলেন, ঙাঁফাখুম জল প্রপাতের পাথুরে ও তীব্র স্রোতপূর্ণ অভিজ্ঞ পথ প্রদর্শক ছাড়া ভ্রমনের ছবি তোলা, ভিডিও করার, গোসল করার খুবই ঝুকি পুর্ণ। সেখানে কোন প্রকার পথ প্রদর্শক ছাড়া না যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

 

 

 

ফায়ার ডিফেন্স চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের স্টেশন অফিসার ডুবুরী দলের প্রধান রহিদুল ইসলাম বলেন, ঙাঁফাখুম জল প্রপাতে গভীরে মৃত দেহ পড়ে রয়েছে। আমরা তিন জনের একে একে অক্সিজেন লাগিয়ে ৮ ঘন্টা মধ্যে মোঃ ইকবাল হোসেনের মৃত দেহ উদ্ধার করেছি।

 

 

 

থানচি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন মজুমদার বলেন, অত্র উপপরিদর্শক মো: রিয়াজুল সহ ৬ জনের পুলিশের দল মোঃ ইকবাল হোসেনের মৃত দেহ নিয়ে আসছেন অত্র থানচি থানা পৌছতে রাত হতে পারে। থানচি হতে ঙাঁফাখুম যাতায়াতে পাঁয়ে ট্রেকিং করে মোট ১০ ঘন্টা সময় প্রয়োজন হয়। আগামিকাল সকালের মৃতদেহটি স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হবে।

 

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ -আল-ফয়সাল বলেন, ‘পর্যটকেরা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়নি। প্রশাসনে অনুমোদিত পথ প্রদর্শক গাইডও নিয়ে যাননি। প্রশাসনিকভাবে কেবল তিন্দুতে বংড/ রাজা পাথর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করছে। রেমাক্রিখুম, নাফাখুমে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও ঙাফাঁখুমের কীভাবে গেলেন তা তদন্ত করা হচ্ছে।

 

 

উল্লেখ্য ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন। একই বছরে মাঝামাঝি সময় থেকে এ তিন উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএন এফ) নামের একটি সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা বাড়তে থাকে। কেএনএফের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার যোগাযোগের অভিযোগও ওঠে। ২০২২ সালের ৯ অক্টোবর থেকে যৌথ বাহিনী কেএনএফ ও শারক্বীয়ার জঙ্গিদের দমনে অভিযান শুরু করলে নিরাপত্তার কারণে ২০ অক্টোবর থেকে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এছাড়াও ২০২৪ সালে ২রা এপ্রিল থানচি সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের ভর দুপুরে কেএনএফের সদস্যরা ডাকাতি করেন তখন থেকে ফের নিষেধাজ্ঞা শুরু করেন প্রশাসন।

Related Articles

Back to top button