Breakingচট্টগ্রাম অঞ্চলসারাদেশ

চার মাসের ব্যবধানে চলে গেল বাবা- মা … অসহায় চার সন্তান

চট্টগ্রাম :
ফটিকছড়ির নাজিরহাট সেন্ট্রাল পার্ক হসপিটালে সিজারিয়ান অপারেশনে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ ওঠা গৃহবধূ রোকছানা আকতার মুন্নি (৩৭) আট দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ১ সেপ্টেম্বর সকালে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছেন।

 

এদিকে,স্ত্রীর চার মাস তের দিন আগে অসুস্থ জনিত কারনে অকালে মুত্যুবরণ করেন মুন্নীর প্রবাস ফেরৎ স্বামী মোহাম্মদ ফোরকান। অল্প বয়সে পিতা মাতা দুজনকে হারিয়ে পাগল প্রায় ফোরকান- মুন্নীর অবুঝ চার সন্তান। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনায় এলাকার মানুষ শোকে পাথর বনে গেছে। এরই মাঝে তাদের রেখে যাওয়া অবুঝ চার শিশুকে দেখতে ফটিকছড়ি পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের উত্তর রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের হাশেম চৌধুরী বাড়ির ফোরকান -মুন্নীর কুড়ে ঘরে প্রতিদিন উপস্থিত হচ্ছেন শতশত নারী- পুরুষ।

 

এর পূর্বে গত ২৪ আগস্ট সন্তান সম্ভাবা মুন্নীর প্রসব বেদনা অনুভুত হলে নাজিরহাটের বেসরকারী হাসপাতাল সেন্ট্রাল পার্ক হসপিটালে ভর্তি হয় ।ঐ দিন রাতেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এক পুত্র সন্তান জন্ম দেন মুন্নী। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২৭ আগস্ট ২০২৪ সেন্ট্রালপার্ক হসপিটাল কর্তৃপক্ষ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

 

সেখানে দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মুন্নির অবস্থা আরও বেগতিক হয়ে উঠে। এর মধ্যে এলাকাবাসী ও স্বজনরা সেন্ট্রালপার্ক হসপিটালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে প্রতিষ্ঠানটির সামনে বিক্ষোভ ভীড় জমান। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতালের অভ্যন্তরে হামলা চালায়। এমন পরিস্থিতিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও কর্মচারীরা সটকে পড়েন।

 

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ফটিকছড়ি থানা পুলিশ গিয়ে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে পরদিন ২৯ আগস্ট ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী।

 

জানতে চাইলে মুন্নির মামা মো. হাসেম বলেন, সেন্ট্রাল পার্ক হসপিটালে আমার ভাগ্নি মুন্নীকে ভুল অস্ত্রোপচার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই। অভিযোগের বিষয়ে হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. সোলায়মানের বক্তব্য জানতে তাঁর মোবাইলে একাধিক কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম বলেন, আমাকে প্রধান করে এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা কাজ শুরু করেছি। রোগীর মৃত্যুর কারনে আমাদের কাজ কিছুটা পিছিয়ে যেতে পারে। আশা করি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসবে।

Related Articles

Back to top button