চার ছাত্র যুব নেতা হত্যার বিচারের দাবিতে খাগড়াছড়িতে ছাত্র ধর্মঘট পালিত
স্টাফ রিপোর্টার , খাগড়াছড়ি :
পানছড়িতে ছাত্র-যুব নেতা বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনের হত্যাকারীদের গ্রেফতার-বিচার ও ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙে দেয়ার দাবিতে খাগড়াছড়ি জেলায় স্কুল-কলেজে ছাত্র ধর্মঘট কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই পালিত হয়েছে।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, রবিবার বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের আহবানে খাগড়াছড়ি জেলা ব্যাপি ছাত্র ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে।
ছাত্র ধর্মঘটের সমর্থনে খাগড়াছড়ি জেলার শতাধিক প্রাথমিক-মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীরা ক্লাশে যোগদান করেনি এবং পাঠদান কার্যক্রম কার্যত বন্ধ ছিল। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান থাকায় কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও চলেনি শ্রেণী কার্যক্রম।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা বলেন, খাগড়াছড়ি জেলার দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শত শত শিক্ষার্থী স্কুল কলেজে না গিয়ে ছাত্র-যুব নেতা বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন। এর আগে শিক্ষার্থীরা স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান ও ৪ ফেব্রুয়ারি পানছড়ি উপজেলায় ছাত্র ধর্মঘটে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ ও সমর্থন জানিয়েছেন। এটি বর্তমান শাসক গোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ওপর চলা দমন পীড়ন, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
পানছড়িতে ৪ জন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দুই মাস পূর্ণ হলেও প্রশাসন এখনো হত্যাকারীদের গ্রেফতার করেনি। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। সরকারের মদদে সন্ত্রাসীরা পানছড়িতে বিপুল চাকমা সহ ৪ জনকে হত্যা করেছে। একইভাবে মহালছড়িতে ২ জন ও সাজেকে ২ জন হত্যা হত্যা করা হয়েছে। অবিলম্বে বিপুল চাকমা সহ ৪ নেতা হত্যার ঘটনায় জড়িত খুনী “নব্য মুখোশ” সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচার এবং ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙে দেয়ার দাবি জানান।
এদিকে ছাত্র ধর্মঘট কর্মসূচি পালন শেষে খাগড়াছড়ি সদরে, মানিকছড়ি, পানছড়ি, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের স্ব স্ব শাখার উদ্যোগে মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ সরকারের মদদপুষ্ট ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর সদস্যরা পানছড়ির অনিলপাড়ায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পিসিপির সাবেক সভাপতি বিপুল চাকমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সহ—সভাপতি সুনীল ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সভাপতি লিটন চাকমা ও ইউপিডিএফের সদস্য রুহিন বিকাশ ত্রিপুরাকে গুলি করে হত্যা করে।
এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার , বিচার ও ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙে দেয়ার দাবিতে গত ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ৫ সংগঠনের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ছাত্র ধর্মঘট কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিলো।