Breakingচট্টগ্রাম অঞ্চলসারাদেশ

চট্টগ্রামে পরীর পাহাড়ের পাদদেশ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রামের জেলা ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের পাহাড় বা ঐতিহাসিক পরীর পাহাড় যাই বলা হোক না কেন এই পাহড়ের বিভিন্ন এলাকায় এখনো অনেক অবৈধ স্থাপনা রয়ে গেছে। হোটেল সহ নানা ধরনের বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কারনে আদালত ও অফিস চলাকালে এই পরীর পাহাড়ে উঠতে নানা ঝামেলার সৃষ্টি হয়।

 

১১ জানুয়ারী ২০২৪ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের একটি ভ্রাম্যমান আদালতের টীম পুরাতন বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশ দিয়ে পরীর পাহাড়ে ওঠার যে সড়ক রয়েছে তার পাশের অন্তত ১৭ টি বিভিন্ন ধরনের বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দিয়েছে। এতদিন এসব বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো নানা মামলা দিয়ে অত্যন্ত মূল্যবান এই সরকারি খাস জমিতে ব্যবসা করে আসছিল।

 

জেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে উদ্ধার হওয়া জমির বর্তমান বাজার মূল্য কমপক্ষে ২০ কেটি টাকা। অবৈধ দখলে থাকা এসব জায়গা উদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া হলেও দখলদারদের মামলার কারণে দীর্ঘদিন উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। অবশেষে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) অভিযান চালিয়ে সরকারি খাস জমিতে থাকা প্রায় ১৭টির মতো ছোট-বড় দোকান উচ্ছেদ করা হয়।

 

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি জানান, এই জমিতে প্রায় ১৪ দশমিক ৩৬ শতক সরকারি জায়গা রয়েছে। এসব জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ স্থাপনাগুলো ছিল। উদ্ধার করা জায়গায় জনস্বার্থে এ জায়গায় ওয়াশ ব্লক স্থাপন, বসার স্থান নির্মাণ ও জন সাধারণের চলাচলের পথ প্রশস্তকরণ কার্যক্রম পরিচালিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, ৩০টি সরকারি অফিস ও কয়েকটি আদালত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রায় ৩ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারি ও বিচারক, ৭/৮ হাজার আইনজীবী এবং ৪/৫ হাজার আইনজীবী সহকারীরা দায়িত্ব পালন করেন। এখানে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার লোক সরকারি সেবা নিতে ও বিচারের প্রত্যাশায় যাতায়াত করে। এতে বিপুল পরিমাণ লোকজনের যাতায়াতে ছোট্ট একটি রাস্তায় প্রতিনিয়ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এমনকি মুমূর্ষু অসুস্থ কোনো লোককেও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

 

বিপুল সংখ্যক সেবা গ্রহীতা ও সাধারণ মানুষকে বিশ্রামাগার, টয়লেট, সুপেয় পানি কিংবা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়ার মত উন্মুক্ত কোনো স্থান এখানে নেই। এসব সুযোগ-সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও সরকারি এসব জায়গা অবৈধ দখলে থাকায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। অবৈধ দখলদার এসব ভূমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও তা তারা ছাড়েনি। পরবর্তীতে উচ্ছেদের জন্য নোটিশ দেয়া হলে তারা মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট পিটিশন দায়ের করে। ফলে উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। গতবছরের ২৭ নভেম্বর এবং ২৩ নভেম্বর রীট নিষ্পত্তি হওয়ায় বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ এফ এম শামীম উপস্থিত ছিলেন। উচ্ছেদ অভিযানে নগর পুলিশের ৩০ সদস্য, পিডিবির প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম সহযোগীতা করে।

Related Articles

Back to top button